‘গণহত্যার’ আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘকে বিএনপির চিঠি

| বুধবার , ১৪ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

ছাত্রজনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ‘গণহত্যার’ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়ে সংস্থার আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের কাছে এই চিঠি হস্তান্তর করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ তার সঙ্গে ছিলেন।

পরে সাংবাদিকদের আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতিসংঘের কাছে আমাদের একটি আবেদন, সেটা হচ্ছে একটি অবৈধ সরকারের অধীনে বাংলাদেশে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকদের যে হত্যা করা হয়েছে, তার একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিকমানের স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ঘটনা উদঘাটন করার জন্য আমরা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। আমরা চিঠি দিয়েছি। তারা জাতিসংঘে পাঠাবেন। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, গুম করা হয়েছে নাগরিকদের, এটা উন্মোচন করার প্রয়োজন আছে এবং জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে, এই হত্যাযজ্ঞ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়এটাকে জাতির সামনে, বিশ্বের সামনে আমাদেরকে তুলে ধরতে হবে। আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য পরিচ্ছিন্ন একটি নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য তদন্তের কথা বলেছি। জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। আমরাও এন্টেরিম গভর্নমেন্টকেও বলেছি, জাতিসংঘকে বলার জন্য। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে এরকম একটি তদন্ত সকলের আকাঙ্ক্ষা, জাতির আকাঙ্ক্ষা বলে আমরা মনে করি এবং সেটাই আমরা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি।

এই তদন্তের বিষয়বস্তু নিয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, এখানে গণহত্যার ওপরেই তদন্ত হবে। তার মানে এই না যে, দেশের মধ্যে যে আইনি ব্যবস্থা, সেটার সাথে সাংঘর্ষিক কিছু নাই। কারণ আমাদের আগে আইন বলে তো কিছু ছিল না দেশে। এখন সেটা আমরা ক্রমান্বয়ে ফিরে পাচ্ছি। দেশের অভ্যন্তরে যেটা হবে সেটা তো অন্য বিষয়। যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তা সারা বিশ্বের কাছে ঘৃণিত হয়েছে এবং সারা বিশ্ব এটার প্রতিবাদ করেছে।

একজন ‘গণহত্যাকারী’ আবার দেশে ফেরত এসে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কিনা প্রশ্ন করা হলে আমীর খসরু বলেন, দেখুন ফিরে আসা না আসা তো তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কিন্তু গণহত্যার বিচারের সম্মুখীন হবে এটা নিয়ে কারো মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। ব্যক্তি, দলতাদের যে এই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এ ব্যাপারে কারো মনে সন্দেহ নাই। এটা কোনো আলোচনার বিষয় নয়।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন অগাস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। সে সময় জেলায় জেলায় সহিংসতায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রায় তিনশ মানুষের প্রাণ যায়। এরপর গত ৫ অগাস্ট আন্দোলনারীদের ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। ওই আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সায়েদের মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আলমামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ এবং যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহযোগিতা করব : সেনাপ্রধান
পরবর্তী নিবন্ধনৌ-পথে পালানোর সময় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার