গণতন্ত্র রক্ষায় চট্টগ্রামকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভাইস–চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দিষ্ট করে বলেছেন এই চট্টগ্রাম বিপ্লবী সূর্য সেনের। সুতরাং কোনো অশুভ শক্তি দেশের গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা করলে, তা রুখে দিতে হবে। এই দায়িত্ব চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিসহ সবশ্রেণির নেতাকর্মীর।
গতকাল সোমবার দুপুরের নগরের লালখান বাজারের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম, সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, বিএনপির শ্রম ও বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিমুদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল আলম ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। সভাপতিত্ব কনেন নগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, সানের দিনে যে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম চলছে সেটাকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা চাই দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে। ঐক্য ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সেটা সফল হবে না যদি অন্তর থেকে কাজ না করা হয়। তিনি বলেন, দেশের মধ্যে যে অরাজক পরিস্থিতি এবং দেশের মানুষের কল্যাণ বিরোধী যে অপকর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে সেটাকে আমরা আমাদের শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। দলের ভেতরে এবং বাইরে ঘাপটি মেরে কিছু লোক রয়ে গেছে। তাদের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে বের করতে হবে।
গত রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। সাক্ষাৎ–এ কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, বিশেষ কোনো কথা নেই। সংগঠনের অগ্রগতির বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি বলেছি বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, তাতে স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী দু–একটি দল পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে দেশকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। তিনি বললেন আমাদের কাজ ফল দেবে, আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে মানুষ মূল্যয়ন করবে।
অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেন, সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কিছু ঘাপটি মেরে থাকা লোক জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাচ্ছে। নানা সংস্কারের কথা বলে এবং বিভিন্ন আপত্তি তুলে নির্বাচনকে তারা প্রলম্বিত করতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি দেশের অনুষ্ঠিত যত নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তার বেশিরভাগ নির্বাচনে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে জয়লাভ করেছে জনগণের ভোটে। জনগণ বিএনপির প্রতি বিশ্বাস রেখেছে আর বিএনপি প্রতিবারই জনগণের বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে চেষ্টা করেছে। গণতন্ত্র যখনই বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে; তখনই এই বিএনপি শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে একবার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একবার এবং দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার সফল সংগ্রামে জাতিকে এ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জাতির অধিকার, মানবাধিকার এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে।
আহমেদ আযম খান বলেন, একটি মহল, একটি গোষ্ঠি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে চাইছে, কৃতিত্ব তারা নিজেরা নিয়ে নিতে চাইছে। গত ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামকে জনগণের কাছে ভুলিয়ে দিয়ে, শুধু কয়েকদিনের আন্দোলনকে সামনে টেনে এ দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল গণঅভ্যুত্থানকে তাদের নিজেদের কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমরা বিএনপি এ কৃতিত্ব একা নিতে চায় না; এ কৃতিত্ব বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র জনতার। কিন্তু কেউ যদি কৃতিত্ব নিতে চান তাহলে আগের সেই দৃষ্টান্তকরই মনে করিয়ে দিবে। এটা তাদের মনে রাখা উচিত।
তিনি বলেন, যারা জনগণের আশা–আকাঙ্ক্ষার সংসদ নির্বাচন বাদ দিয়ে কলেজ, ভার্সিটি বা স্থানীয় নির্বাচনের চিন্তা করে জনগণকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলার চেষ্টা করছেন; তারা সঠিক পথে আসুন। পত্রিকায় দেখি ডাকসু নির্বাচনের কথা। দেশের মানুষ ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালেও ভোট দিতে পারেনি। দেশের মানুষ মুখিয়ে আছে তাদের নির্বাচিত সংসদীয় সরকারের জন্য। তাই আগে সংসদ নির্বাচন এরপর অন্য নির্বাচন।