গণঅভ্যুত্থানে ‘শহীদের’ তালিকা যাচাইয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কমিটি

| শনিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা যাচাইবাছাই করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে মাঠপর্যায়ে সরেজমিনে গিয়ে শহীদদের তালিকা যাচাইবাছাইয়ে আট সদস্যের একটি কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা) উপসচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ ও আহতদের একটি খসড়া তালিকা ডেটাবেজ এমআইএস স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা বিশেষ প্রয়োজন। আট সদস্যের কমিটিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি এবং জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়ক সদস্য হিসেবে কমিটিতে থাকবেন। প্রতিটি জেলার শহীদ ও আহতদের তালিকা সরেজমিন যাচাইবাছাই, কোনো তথ্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ থাকলে তা ঠিক করা, ভুল তথ্য পাওয়া গেলে তা বাতিল করার সুপারিশ করা, তালিকার বাইরে কোনো শহীদ এবং তার পক্ষে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে তা অন্তর্ভুক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। খবর বিডিনিউজের।

আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে তালিকা যাচাইবাছাই করে পূর্ণাঙ্গ নির্ভুল তালিকা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে চিঠিতে। সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এ তালিকায় কেবল গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে শহীদ ও আহতদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে জুলাইয়ের শুরুতে যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা তীব্র আকার ধারণ করে ১৫ জুলাইয়ের পর। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সহিংসতা। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এই আন্দোলনে হতাহতদের তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবির এই কমিটির প্রধান। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা তালিকাটি তৈরি করে। কমিটি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭২৮ জন নিহত ও ২০ হাজার ২৬৩ জন আহতের তালিকা সরকারের কাছে এসেছে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিভিন্ন উৎস অনুযায়ী ৮০০ জন শহীদের একটা তালিকা আছে। সেগুলো ভেরিফাই করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে যেন প্রতিটি জেলা থেকে একটা তালিকা পাঠানো হয়। আগামী রোববারের মধ্যে একটা চূড়ান্ত তালিকা পাওয়া যাবে।

আন্দোলনে শহীদদের সম্মানে আজ শনিবার রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি স্মরণ সভা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হলেও তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় অনুষ্ঠানটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্মাণের চার বছরেই দেবে গেছে সেতু, দুর্নীতির অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধচার বছরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি