ঘূর্ণিঝড় হামুন তাণ্ডবের ক্ষত এখনো শুকায়নি কক্সবাজারে। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল কুতুব একাডেমিতে এখনো চলছে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান। কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিষ্ঠানটির মেরামতে সরকারি–বেসরকারি কোনো সংস্থা কিংবা জনপ্রতিনিধি এখনো এগিয়ে আসেনি।
জানা যায়, সরকারের নীতি অনুসরণ করে শিক্ষার কাঠামোকে আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করা হচ্ছে দারুল কুতুব একাডেমিতে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি তাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত পাঠ শেখানোর জন্য সেখানে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুন আঘাত হানে কঙবাজারের বিভিন্ন এলাকায়। ওইসময় ধ্বংস হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পুনঃনির্মাণে সরকারি বেসরকারি কোনো সংস্থা এগিয়ে আসেনি। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের কখনো খোলা আকাশের নিচে কখনো বা খেলার মাঠে পাঠদান করা হচ্ছে।
পৌরসভার জরুরি সহযোগিতা ও তালিকায় নেই ঘুর্ণিঝড় হামুনের তান্ডবে লন্ডভন্ড হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। গরীব–অসহায় ও জলবায়ু উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীর শিশুসহ এতিমদের বিনা বেতনে পড়ালেখার সুযোগ পাওয়া ৩ শতাধিক ছাত্রছাত্রী আগামী নভেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন সিকদার জানান, ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর ২০০৭ সালে বিদ্যালয়টি ইআইআইএন এ অন্তর্ভুক্ত করা হলে ২০১০ সাল থেকে বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর নিয়ে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যালয়ে ১০ জন শিক্ষক পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিদ্যালয়টি পুনঃনির্মাণ না হলে আগামী নভেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ফলে অংকুরেই শেষ হয়ে যাবে তাদের শিক্ষা জীবন। সরকারি–বেসরকারি সংস্থা, জনপ্রতিনিধি এবং বিত্তশালীদেরকে বিদ্যালয়ের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাওন বলে, ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আমরা কষ্ট করে লেখাপড়া করছি। ছাউনি না থাকায় বিদ্যালয়ের ভেতরে বসে ক্লাস করতে পারছি না। খোলা আকাশের নিচে বিদ্যালয়ের উঠানে ক্লাস করছি। অনেক কষ্ট হচ্ছে আমাদের। জাহাঙ্গীর আলম নামে এক অভিভাবক বলেন, ২ দশকের প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ে বিলীন হওয়ার পর পুনঃনির্মাণে কেউ এগিয়ে না আসা দুঃখজনক। এজন্য খোলা আকাশের নিচেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
এ ব্যাপারে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল আজাদের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কঙবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপ্তি চাকমা বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। তারা যদি আমাদের অবগত করে তবে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।