খোঁজ নেন না স্বামী, নবজাতক ফেলে পালিয়ে গেলেন মা!

চমেক হাসপাতাল

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ মে, ২০২২ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

রাতে জন্ম দেয়া নবজাতককে ফেলে সকালেই পালিয়ে গেছেন মা। গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী (৩৩নং) ওয়ার্ডে এমন ঘটনা ঘটেছে। সম্পূর্ণ সুস্থ ওই শিশুকে বর্তমানে নিওনেটাল (৩২নং নবজাতক) ওয়ার্ডে নার্সদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

গাইনী ওয়ার্ড ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি হন ২৪ বছর বয়সী এক প্রসূতি। এসময় প্রসূতির মাও সাথে ছিলেন। ভর্তির পরপরই (নরমাল ডেলিভারিতে) একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী। তবে বুধবার (গতকাল) সকালে ওয়ার্ডের পোস্ট অপারেটিভ কক্ষের পাশের একটি শয্যায় (এঙট্রাওয়ান) নবজাতকটিকে একা পড়ে থাকতে দেখেন দায়িত্বরত নার্সরা। নবজাতকটির কান্নাকাটিতে বিষয়টি নজরে আসে নার্স ও অন্যান্যদের। সকালে ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা নার্স খালেদা বেগম আজাদীকে বলেন, আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও বাচ্চাটির মা বা অন্য কাউকে পাইনি। ভর্তি রেজিস্ট্রারে একটি মোবাইল নম্বর দেয়া ছিল। সেটিতে ফোন করা হয়। কিন্তু রিসিভ করলেও কোন কথা না বলে কেটে দেয়। আমরা বেশ কয়বার চেষ্টা করি। পরে বুঝতে পারি মা ও স্বজনরা বাচ্চাটি ফেলে গেছেন। যাওয়ার সময় বাচ্চাটি নেবেন না বলে পাশের শয্যার এক মহিলাকে নাকি তারা বলে যান। বাচ্চাটির শরীরে কাপড়ও ছিলনা। পরে আমরা তোয়ালে যোগাড় করে বাচ্চাটি আমাদের তত্ত্বাবধানে নিই। নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান ও চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভর্তি রেজিস্ট্রারে ওই তরুণীর স্বামীর নাম লেখা রয়েছে জাবেদ হোসেন। ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে আনোয়ারা। বিয়ের ৩ মাস পর থেকে স্বামী কোন খোঁজখবর না রাখায় জন্ম দেয়া সন্তানটি ফেলে গেছেন ওই প্রসূতি।

যাওয়ার সময় ওই প্রসূতির মা এমন কথা বলে গেছেন বলে পাশের শয্যার কয়েকজন নার্সদের জানিয়েছেন।

এদিকে, শিশুটি নিওনেটাল (নবজাতক) ওয়ার্ডে ভর্তি রাখতে গেলে কোন সমস্যা না থাকায় ভর্তিতে অনাগ্রহ দেখায় সেখানকার দায়িত্বরতরা। পরে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা নিওনেটাল ওয়ার্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশকে ফোন করেন। এরপর নবজাতকটিকে সেখানে (নিওনেটাল ওয়ার্ডে) ভর্তি করানো হয়। শিশুটি বর্তমানে নিওনেটাল ওয়ার্ডে নার্সদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক (নার্স ইনচার্জ) ইনসাফি হান্না।

অন্যদিকে, নবজাতক ফেলে পালিয়ে যাওয়া ওই প্রসূতিকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা সম্ভব বলে মনে করেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, আমরা জিডি করেছি। বিষয়টি তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) দেখবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিয়ের দাবিতে যশোর থেকে চন্দনাইশে ছুটে এলেন প্রেমিকা
পরবর্তী নিবন্ধরাজকীয় প্রত্যাবর্তনে মুশফিকের অনন্য মাইলফলক