খেলার মাঠে ডাম্পিং স্টেশন

প্রতিরোধের ঘোষণা হাইদগাঁওবাসীর

পটিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২৭ মে, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া পৌরসভার উদ্যোগে হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকায় ক্রয়কৃত জায়গায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়। এ নিয়ে জায়গা পরিমাপ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি টিম পরিদর্শনে গেলে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় জনগণ দ্বিমত পোষণ করেন। স্থানীয়রা জানান, এটি খেলার মাঠ এখানে ডাম্পিং স্টেশন গড়ে তোলা হলে শিশুরা তাদের মাঠ হারাবে। তাছাড়া পরিবেশেরও দারুণ ক্ষতি হবে। তাই যে কোনও কিছুর বিনিময়ে হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকা ও খেলার মাঠে ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্প প্রতিরোধের ঘোষণা দেন তারা। এ নিয়ে গত দুইদিন স্থানীয়রা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশেরও আয়োজন করেছেন। স্থানীয়রা এ প্রকল্পটিকে ময়লার ডিপো ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, পৌরসভার উদ্যোগে হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকায় ক্রয়কৃত জায়গায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং স্টেশন থেকে বর্জ্য রিসাইক্লিলিংয়ের মাধ্যমে জৈব সার, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনও করা হবে। পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ‘রিসাইলেন্ট আরবান এন্ড টেরিটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (আরইউটিডিপি)’ আওতায় এ প্রকল্পটি চালু হলে প্রকল্প এলাকায় ২ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকায় ১০০০ হাজার শতক জায়গাও ক্রয় করে তারা।

প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গত সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) কামাল হোসেন, পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের উপ পরিচালকসহ একটি টিম প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন করেন। এর পরই হাইদগাঁও এলাকার শতাধিক মানুষ পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে পৌরসভাকে কোনোভাবেই ময়লার ভাগাড় ও ডাম্পিং স্টেশন করতে দেবে না বলে ঘোষণা দেন।

পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল জানান, হাইদাগাঁও পাহাড়ি এলাকায় জনবসতির বাইরে উন্নত দেশের আদলে আধুনিক ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এটি একটি সরকারি প্রকল্প। স্থানীয়রা না চাইলে, সরকার এই প্রকল্প থেকে সরে যাবে। কিন্তু পরিবেশ দূষণের অজুহাতে স্বার্থান্বেষী একটি চক্র স্থানীয় জনগণকে ‘ভুল’ ব্যাখ্যা দিয়ে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার উপযুক্ত স্থান কোনটি সেটা বিবেচনা করে সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করবে। তাছাড়া পৌরসভার ৩৩ বছরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগকে ভেস্তে দিতেই কুচক্রী মহলটি প্রকল্পে বাধার সৃষ্টি করছে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলার ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভা পটিয়া। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে এ পৌরসভা হলেও নেই কোনও ময়লার ডাম্পিং স্টেশন। হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের আলম মাস্টারের ফার্মের পাশে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের জায়গা। এখানে জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম করার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। পরবর্তীতে শিশু পার্ক, হটিকালচার করারও পরিকল্পনা হয়। এ জায়গায় পটিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লার ডাম্পিং স্টেশন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। খেলার মাঠে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।

হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম জসিম জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটি কৌশলে না করতে পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লার ডাম্পিং স্টেশন করার চেষ্টা করছে। এ মিনি স্টেডিয়ামের পাশে রয়েছে মাদ্রাসা, স্কুল, মাজার ও বসতি। ময়লার ভাগাড় হলে দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি খেলার মাঠে ডাম্পিং স্টেশন না করার দাবি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধস্বাধীনতাবিরোধীদের নৈরাজ্য প্রতিহত করবে ১৪ দল