অর্থ জারি মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও সর্বশেষ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং বারবার সময় চেয়ে বিলম্ব ঘটানো হচ্ছে। এ জন্য ঋণ প্রদানকারী সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার উপ–মহাব্যবস্থাপককে (ডিজিএম) শোকজ করেছেন আদালত। সময় চেয়ে করা সংক্রান্ত আবেদনের উপর শুনানি শেষে গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন। এতে ঋণ আদায়ে দায়ের করা জারি মামলাটি ব্যাংকের পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতায় কেন খারিজ করা হবে না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মেসার্স ক্লুইস্টন ট্রেডিং লিমিটেড, এর মালিক মো. আব্দুল আলিম চৌধুরী ও তার স্ত্রী রওশন আরা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে অর্থঋণ মামলা করে সোনালী ব্যাংক। তাদের কাছ থেকে ব্যাংকের পাওয়া প্রায় ৩২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মামলায় ডিক্রি প্রদান করে আদালত। বলা হয়, ৩০ দিনের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করার জন্য। কিন্তু ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত ১৬ মার্চ জারি মামলাটি দায়ের করা হয়। এরপর থেকে ব্যাংক আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। শুধু সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। অথচ ৯০ দিনের মধ্যে জারি মামলা নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে।
আদালতসূত্র জানায়, জারি মামলা দায়েরের পর উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও দায়িকরা আদালতে অনুপস্থিত থাকেন। হাজির হননি আদালতে। এ জন্য ব্যাংক তথা ডিক্রিদারের পদক্ষেপের জন্য দিন ধার্য করা হয়। পরপর চারটি ধার্য দিনে ডিক্রিদার ব্যাংক দায়িকদের অর্থাৎ খেলাপিদের বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সময়ের আবেদন করে, ঘটাচ্ছে বিলম্ব।
আদেশে আদালত বলেন, ব্যাংকের এমন কার্যকলাপের কারণে বিদেশে পলাতক অর্থ পাচারকারী ঋণ খেলাপিরা ঋণ পরিশোধে কোন বাধ্যবাধকতা অনুভব করছে না। ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা মূল ঋণ পরিশোধ না করেই বার বার সুদ মওকুপ সুবিধা লাভের ফলে খেলাপি ঋণ পরিশোধের কোন তাগিদ বা চাপ অনুভব করেন না। আদালতসূত্র জানায়, দায়িক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল আলিম চৌধুরী ও তার স্ত্রী রওশন আরা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ১৫ টির অধিক অর্থঋণ মামলা চলমান রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদিকে দেশে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দীর্ঘ বছর ধরে দায়িকরা বিদেশে পলাতক রয়েছেন মর্মে বিভিন্ন মামলার নথিতে তথ্য রয়েছে বলে জানান বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।