এখন পৌষ মাস। গ্রাম বাংলায় শীত মানেই বাহারি পিঠার আয়োজন। শীতের পিঠায় অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুর গুড়। তা পাওয়া যায় খেজুরের রস থেকে। তাই শীতের আগমনের সাথে সাথে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা। খেজুরগাছ কাটা-ঝোড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অন্য সব গ্রামের মতো খেজুরের রস সংগ্রহে প্রস্তুত মীরসরাই অঞ্চলের গাছিরা।
বগাচতর গ্রামের কৃষক আলী আজম বলেন, আমি, আমার বড় ভাই মাহবুব আলম ও কাকা আমজাদ হোসেন প্রতি বছর প্রায় ১১০টি খেজুরগাছে হাঁড়ি বসাই। ২৪ হাজার টাকা খাজনা দিয়ে বেড়িবাঁধের এই গাছগুলো শীতের শুরুতে তৈরি করি। ভরা মৌসুমে এসব গাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫০-৩০০ লিটার রস পাই। অনেকে এখানে এসে আমাদের কাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন। বিক্রির জন্য কখনো কখনো চট্টগ্রাম শহরেও পাঠাই। তিনি বলেন, প্রতি লিটার রস ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করি। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার রস বিক্রি হয়। প্রায় অর্ধেকের মতো লাভ থাকে। প্রতি মৌসুমে লক্ষ টাকা করে বাড়তি আয় হয় বলে জানান তিনি।
গাছি মাহবুব আলম বলেন, আমরা সাধারণত প্রান্তিক কৃষক। নিজের জমি আর বর্গা জমিতে চাষ করি। পাশাপাশি মৌসুমি সবজি, ধান চাষ করি। শীতের মৌসুমে খেজুরগাছ থেকে বাড়তি আয় হয়। ১৮ বছর ধরে চাচা-ভাতিজার টিম খেজুরগাছ থেকে রস আহরণ করছি। বাড়তি এই টাকা সংসারের অভাব কিছুটা দূর হয়। প্রতি শীতে পরিবারের জন্য নতুন কিছু কিনতে পারি। সন্তানদের ভালো-মন্দ খাওয়াতেও পারি। তিনি বলেন, ইদানীং কিছুটা শঙ্কায় আছি। সরকার যদি এই বেড়িবাঁধ মেরিন ড্রাইভ সড়কে উন্নীত করে তখন হারিয়ে যাবে এসব গাছ।
মীরসরাইয়ের কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, এখন থেকে গ্রামের অন্যান্য সড়কে ওরা খেজুরগাছ রোপণ করতে পারবে। তাহলে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। সকল প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সরকার আন্তরিক বলে জানান তিনি।