সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় খেজুর খাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে এক বাংলাদেশি রুমমেটের হাতে নিহত হয়েছেন আরেক বাংলাদেশি তরুণ। লোহার রডের আঘাতে মাথায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয় মোহাম্মদ আরিফ (২৪) নামের ওই যুবকের। পরে তার লাশ ১৬ দিন সংরক্ষিত ছিল আবুধাবির কেন্দ্রীয় হিমঘরে।
নিহত আরিফ কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের দেবাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাকারিয়ার ছোট ছেলে। পরিবারের আর্থিক চাপে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই ১০ মাস আগে তিনি ভিজিট ভিসায় আমিরাতে পাড়ি জমান। রামু সরকারি কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ভিসা নবায়নে জটিলতার কারণে বৈধতা হারান এবং কোনো স্থায়ী পেশায় যুক্ত হতে পারেননি। খবর বিডিনিউজের।
আরিফের বন্ধু ও প্রতিবেশী প্রবাসী মোহাম্মদ সরওয়ার জানান, গত ২৭ মে সকালে শারজার ১০ নম্বর সানাইয়ার একটি বাসায় খেজুর খাওয়া নিয়ে রুমমেট মোহাম্মদ ওসমানের সঙ্গে আরিফের বিতণ্ডা হয়। সরওয়ার বলেন, ঘটনার সূত্রপাত আগের রাতে। বাংকবেডের ওপর তলায় বসে খেজুর খাওয়ার সময় আরিফের ফেলা বিচি নিচের তলায় থাকা ওসমানের মুখে পড়ে যায়। এতে ওসমান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ঘটনার দিন সকালে রুম খালি পেয়ে ওসমান আবার আরিফের ওপর চড়াও হন এবং লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।
রক্তাক্ত অবস্থায় আরিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে শারজার আল কাসেমি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে টানা ১৩ দিন কোমায় থাকার পর গত ৯ জুন মারা যান আরিফ। আইনি প্রক্রিয়া ও কনস্যুলেট–সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতার কারণে তার লাশ আরও ১৬ দিন সংরক্ষিত থাকে আবুধাবির কেন্দ্রীয় হিমঘরে। গত বুধবার আরিফের লাশ বাংলাদেশে পাঠানো হয়। একই দিন তাকে কঙবাজারের মহেশখালীতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ ওসমান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।