চলমান কাজ শেষ করার পরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরবর্তী কাজ পাবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম।
একনেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কক্সবাজারের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে আসাদুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে যারা জলবায়ু উদ্বাস্ত কিংবা বিমানবন্দর সমপ্রসারণ করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করতে হবে। তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ওখানে যে আবাসন তৈরি হয়েছে, সেই আবাসনে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। তালিকাভুক্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ, এমনও হতে পারে, সরকারি আবাসন তৈরি হয়েছে দেখে অন্যান্য জায়গা থেকে লোকজন এসে সেখানে আবাসনের জন্য চেষ্টা করতে পারে। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
এক ঠিকাদারের একাধিক কাজ পাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের অনেক প্রকল্পে বিশেষত নির্মাণ প্রকল্পে দেরি হয়ে যায়। এই দেরির একটা কারণ হলো এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেয়ে থাকে। মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কতগুলো কাজ পেয়েছে, কাজ সময়মতো শেষ করেছে কিনা, কোন সময় শেষ করেছে-এসবের একটা তালিকা সব মন্ত্রণালয় তৈরি করবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। চলমান কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে। এর দুটি উদ্দেশ্য; একটা হলো আমাদের নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে নির্মাণ কাজের জন্য, মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত থাকব না। দ্বিতীয়ত সময়মতো আমাদের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
সড়কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে সচিব বলেন, রাস্তা বাড়ানো হচ্ছে। রাস্তাকে টেকসই এবং ভালো রাখার জন্য রাস্তার পাশে জলাধার কিংবা বৃষ্টির পানি নামার ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। বিশেষত হাইওয়ের পাশে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষত যারা লং ড্রাইভ করেন বা দীর্ঘসময় ধরে রাস্তায় থাকেন তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে।
দেশের নাগরিকদের বৈধ পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কার্ড দিতে নির্বাচন কমিশনের অধীনে ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, দেশের ১৪ বছরের বেশি বয়সী সকল বাংলাদেশির ছবিসহ ভোটার আইডি ও স্মার্ট কার্ড তৈরির জন্য এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি মূলত ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার গৃহীত ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়।
এই পর্যায় আগামী মাস থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের নভেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধাদির উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।