খাসোগি হত্যার পর সৌদি যুবরাজের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর, নিবিড় সহযোগিতাই লক্ষ্য

| মঙ্গলবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ at ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকান্ডের সাত বছর পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিশ্ব মঞ্চে নিজের অবস্থান পুনরুদ্ধারের মিশনে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুই দেশের বহুদশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও নিবিড় করা। তাছাড়া, বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতেও আগ্রহী দুই দেশ। খবর বিডিনিউজের।

২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রসৌদি আরব সম্পর্ক টালমাটাল হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহের আঙুল ছিল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের দিকে। সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তোলা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যার পেছনে যুবরাজ বিন সালমানের হাত রয়েছে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে, যুবরাজ বিন সালমানই খাসোগিকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যুবরাজ বিন সালমান অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন। ৭ বছর আগের সে ঘটনার রেশ এখন কেটেছে। পুরনো সেই তিক্ততা থেকে সরে এসে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে নজর দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব। যার ফলে আজ যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন যুবরাজ সালমান। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে সৌদি আরবের এ কার্যত শাসকের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও একবার সামনে নিয়ে আসতে চলেছে। খাসোগি হত্যার ৭ বছর পর সৌদি যুবরাজ এখন নিজেকে শান্তি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা এবং সিরিয়াকে আরব লীগের পরিসরে ফেরাতে ভূমিকা রাখার মধ্য দিয়ে। দেশের ভেতরেও তিনি যে সামাজিক পরিবর্তন এনেছেন, তা আধুনিক সৌদি আরবের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা কমানো, রক্ষণশীল সামাজিক বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া,সব মিলিয়ে তিনি একদিকে সংস্কারক, অন্যদিকে কঠোর শাসক। ৪০ বছর বয়সী এই যুবরাজ সৌদি সমাজে এমন সব পরিবর্তন এনেছেন যা এক দশক আগেও অকল্পনীয় ছিল। নারীদের গাড়ি চালানো, কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় অংশগ্রহণ, নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশা,সবই এখন দেশে স্বাভাবিক চিত্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল মুনিরের