খালের এক ইঞ্চি জায়গাও বেদখলে থাকবে না : মেয়র

| শুক্রবার , ৯ জুলাই, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সুস্পষ্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নগরীর পানি চলাচলের প্রধান গতিপথ খালগুলোর এক ইঞ্চি জায়গাও বেদখল থাকবে না। অবৈধ দখলদার ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যে-যত বড়ই প্রভাবশালী হোক-না কেন এ ক্ষেত্রে কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না। সি.এস এবং আর.এস জরীপের নক্সা অনুযায়ী খালগুলোর সীমা-রেখা যেভাবে নির্ধারিত রয়েছে সেই অবস্থান অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবহমান অনেকগুলো খাল ভূমি দস্যুদের আগ্রাসনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যে-গুলো এখনো প্রবহমান সেগুলোর দু’পাশের ৮-১০ ফুটের বেশি অংশ বে-দখল হয়েছে, অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এর বিরূপ প্রভাবে নাগরিক স্বস্তি ওষ্ঠাগত। এ নগরীর স্বার্থেই যে-কোন মূল্যে খালের দু’পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলদার মুক্ত করে নাগরিক স্বস্তি নিশ্চিত করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ বাকলিয়া ইসহাকের পুল সংলগ্ন এলাকায় চসিকের খাল পরিষ্কার ও আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, মির্জাখাল-বির্জাখাল-মাঝের খাল দিয়ে বাকলিয়া এলাকার পানি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর অসচেতনতায় প্রতিনিয়ত এ তিনটি খাল পলিথিন ও আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ এলাকার কিছু মানুষ এ খালগুলোর নাব্যতা হরণের জন্য দায়ী। বার বার খাল পরিষ্কার করার পরও কিছু দিন না যেতেই খালগুলো আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এর দায় চসিক একা নিতে পারে না। মূল দায় এলাকাবাসীর। তারা ব্যর্থ হলে কঠোর হতে বাধ্য হবো। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সিডিএ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর সফল বাস্তবায়ন আমাদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। যে-কোন বড় প্রাপ্তির জন্য সাময়িক ভোগান্তি হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হচ্ছে এবং এটা মেনে নিতে হবে। তবে আমি আশা করবো, বর্ষায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ যেহেতু সমায়িক বন্ধ রয়েছে সেহেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে খালের যে সকল অংশে বাঁধ বা ব্লক স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো আপতত: সরিয়ে পানি চলাচলের পথ বাধামুক্ত করা হবে। চউক কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে একমত। তাই বাধা অপসারণ দ্রুত সম্পন্ন হলে নাগরিক ভোগান্তি লাঘব হবে।
মেয়র বাস্তবায়নাধীন এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটা বাস্তবায়ন হলে যানজট নিরসন হবে। মাত্র আধ ঘন্টায় নগরের কেন্দ্রস্থল থেকে বিমান বন্দরে যাওয়া যাবে। তবে আমি আশা করবো, নগীর এ প্রান্তটা টাইগারপাস ওভার ব্রীজের ওপার থেকে শুরু হোক। ফলে টাইগারপাস ও ওভারব্রীজের নয়নাভিরাম যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে তা সুরক্ষিত হবে।তিনি আরো বলেন, ইদানিং ফ্লাইওভারে অপরাধজনিত ঘটনা ঘটছে। চলমান যানবাহন ছিনতাই ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন সাংস্কৃতিক কমপ্লেঙ নির্মাণ কাজের স্বার্থে নির্মাতা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আপাতত: অন্যত্র সরানোর যে প্রস্তাব চসিককে দেয়া হয়েছে সে-ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এ ব্যাপারে চট্টগ্রামে সংস্কৃতিসেবী, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সুধীজনদের সাথে বসে শহীদ মিনার সরানো বা না-সরানোর বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কারণ শহীদ মিনার আমাদের আবেগ-অনুভূতির একটি পবিত্র জায়গা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিল মো. শহিদুল আলম, মো. নুরুল আলম, কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। প্রেস বিঞ্জপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি
পরবর্তী নিবন্ধসর্বোচ্চ শনাক্তের দিনে দেশে ১৯৯ মৃত্যু