সবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ করে ‘এ’ দলে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের পেসার খালেদ আহমেদ। ঢাকা লিগ খেলে প্রস্তুত ছিলেন শরীফুলও। এদুজন বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে। দুজনের আগুন ঝরানো বোলিংয়ে বড় জয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সিলেটে একদিনের ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলকে ৭ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ ‘এ’ দল । বাংলাদেশের দুই পেসারের বোলিং তোপে আউট হওয়া প্রথম চার ব্যাটসম্যান রানের খাতাই খুলতে পারেননি। পরে ওপেনার রিস মারিয়ু ৪২ ও আট নম্বরে নামা ডিন ফক্সক্রফট ৭২ রানের ইনিংস খেললেও দেড়শ ছুঁতে পারেনি সফরকারীরা। নতুন বলে শরিফুল ও খালেদের দারুণ বোলিংয়ের পর দুটি উইকেট শিকার করেন জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা ইবাদত হোসেন চৌধুরিও। পরে তিন উইকেট নিয়ে স্পিনেও কিউইদের চেপে ধরেন টি–টোয়েন্টির বাংলাদেশ দলে ফেরা তানভির ইসলাম। ১৪৮ রানের লক্ষ্য ছুঁতে কোনো সমস্যা হয়নি বাংলাদেশের। ১৩৬ বল বাকি রেখেই জিতে সিরিজে এগিয়ে যায় নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই বিপদে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। মাইরু ও ফঙক্রফটই শুধু দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন। নতুন বলে শরিফুল ও খালেদের সামনে অসহায় মনে হচ্ছিল কিউইদের। সাত ওভারের মধ্যে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন চার কিউই ব্যাটসম্যান। তৃতীয় ওভারে শরিফুলের বলে এলবিডব্লিউ হন ডেল ফিলিপস। আট বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি ফিলিপস। পরের ওভারে খালেদের জোড়া আঘাত। তিন বলের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ম্যাট বয়েল ও মোহাম্মদ আব্বাস। গত মার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়া আব্বাস দুই বলের বেশি খেলতে পারেননি। ক্যাচ দেন তিনি উইকেটের পেছনে। পরে চমৎকার ডেলিভারিতে নিক কেলির অফ স্টাম্প উপড়ে ফেলেন শরিফুল। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে একটু থিতু হয়ে বেশ কিছু ভালো শট খেলেন রিস মারিয়ু। আরেকপ্রান্তে কিছুটা সময় উইকেট আঁকড়ে রাখা জশ ক্লার্কসনকে থামান ইবাদত। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারের কাছে ক্যাচ দেন ৭ রান করা ব্যাটসম্যান। একটু পর আরও বড় ধাক্কা খায় কিউইরা। তানভির ইসলামকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন মারিয়ু। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কিউইদের বড় ভরসা মিচেল হে। তানভির তাকে ফেরান ৪ রানেই। পরের বলেই যখন ক্রিস্টিয়ান ক্লার্ককে বোল্ড করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ৬২ রানেই ৮ উইকেট নেই কিউইদের। সেখান থেকে ফক্সক্রফটের লড়িয়ে ব্যাটিংয়ে শেষ দুই উইকেটে আরও ৮৫ রান যোগ করে সফরকারীরা। ৮৫ রানে নবম উইকেটের পতনের পর শেষ জুটিতে আসে ৫২ বলে ৬২ রান। যেখানে বেন লিস্টারের অবদান স্রেফ ১০ বলে ৪ রান। ১৪৭ রানে থামে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন খালেদ এবং তানভীর। ২টি করে নিয়েছেন শরীফুল এবং এবাদত। ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালই শুরু করেন পারভেজ হোসেন ইমন। যদিও আগ্রাসী শুরুর পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ক্লার্কের ফুল লেংথ ডেলিভারি ফ্লিক করার চেষ্টায় ভারসাম্য হারিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার। ১২ বলে করেন তিনি ২৪ রান। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ আউট হন ২০ বলে ১৮ রান করে। তিন নম্বরে নেমে দারুন ব্যাটিং করেন এনামুল। ফিরেন ৪৫ বলে ৩৮ রান করে। এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি মাহিদুল ও সোহান। ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দুজন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ বলে ৪২ রান করেন মাহিদুল। সোহানের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচ আগামীকাল বুধবার।