খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস : মেডিকেল বোর্ড

| সোমবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে তার চিকিৎসায় এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড দ্রুত তাকে বিদেশ পাঠানোর সুপারিশ করেছে। রোববার রাতে মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী (এ এফ এম সিদ্দিকী) এই সুপারিশের কথা জানান। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বলে এর আগে খবর ছড়ালেও তা নাকচ করে আসছিল বিএনপি।
দলীয় নেত্রী প্রায় ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’ বললেও তার অসুস্থতার বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য আসছিল না। ডা. ফখরুদ্দিন বলেন, ‘ম্যাডামের সিরোসিস অব লিভার সিরোসিস)। উনার ম্যাসিভ রক্তক্ষরণ হয়েছে।’ খালেদার কোলনে রক্তক্ষরণ চেষ্টা করে আপাতত থামানো গেলেও ভবিষ্যতে তা আবার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।
‘এখন ম্যাডামের লাস্ট টোয়েন্টিফোর আওয়ার্সের মধ্যে ব্লিডিংটা হয়নি। এখন স্টেবল আছে। কিন্তু আমরা আশঙ্কা করছি, আবার উনার যদি রি-ব্লিডিং হয়, তাহলে রি-ব্লিডিংটাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সেটাকে বন্ধ করার মতো মিনস বা সাপোর্টিভ যে টেকনোলজি ম্যানোভার, এটা আমাদের এখানে নেই। সেক্ষেত্রে উনার ব্লিডিং (রক্তক্ষরণ) হয়ে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাবে।’
এখন খালেদার পরবর্তী চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই বলে দাবি করেন এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ম্যাডামের এখন যদি ‘টিপস-ঞওচঝ’ মেথড অ্যাপ্লাই করা না হয়, তাহলে আগামীতে আবার রি-ব্লিডিং হওয়ার সম্ভবনা আছে। এটা নেঙট উইকে ৫০ পার্সেন্ট, নেঙট ৬ সপ্তাহে ৬০ পার্সেন্ট এবং তারপরেও যদি যায়, আল্লাহ না করুক, এটা অবভিয়াস ব্যাপার ঘটতে যাচ্ছে। এটা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা যা করছি- আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টায়। এখন আমরা কিন্তু হেলপলেস ফিল করছি। এখন এরকম একটা অবস্থার মধ্যে দিয়ে উনি যাচ্ছেন।
খালেদার পরবর্তী চিকিৎসা কোন দেশে হতে পারে- প্রশ্ন করলে অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, টিপস হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। আমাদের দেশে টিপস করা রোগী আমি দেখিনি। যারা আমরা রোগী ডিল করি তাদের দ্বিতীয়বার তৃতীয়বার রক্তক্ষরণ হলে তাকে সারভাইভ করা খুবই ডিফিকাল্ট। সেজন্য এই সেন্টারগুলো আমেরিকা ও ইউরোপ বেইসড। ইউএসএ, ইউকে ও জার্মানি। সেখানে এসব রোগের চিকিৎসার জন্য এডভান্সড সেন্টার আছে, তারা এর চিকিৎসা করে। সেখানেও দেশব্যাপী এই রোগের সেন্টার নেই, দুই-একটা আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, আমরা মেডিকেল বোর্ড ম্যাডামের যারা ক্লোজড রিলেটিভ তাদেরকে জানিয়েছি, যারা উনার সাথে আছে তাদেরকে জানিয়েছি। আমরা উনাদের বলেছি, যত দ্রুত পারেন অ্যারেঞ্জ করেন (বিদেশ পাঠাতে), সেটা আমরা বলেছি।
সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ম্যাডামের থার্ড টাইম ব্লিডিং হয়েছে। উনার মতো এইজে হার্ট ফেইলিউর আছে, যার না কি হিমোগ্লোবিন কমে যায়, যার ডায়াবেটিক আছে। এত জটিলতার মধ্যে কিডনির ডিজিজ আছে, উনার যদি এনাল ফেইলিওর হয়ে যায়; এটা কীভাবে আমরা সাসটেইন করব, যদি আমরা পেপ্রসারটা টিপস দিয়ে কমাতে না পারি। সেজন্য আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছি। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, উনার পরিবারকে জানিয়েছি এবং যত তাড়াতাড়ি আপনারা অ্যারেঞ্জ করেন। কারণ এখনও টাইম আছে। উনি স্টেবল আছেন। দেরি করলে তা খালেদাকে নেওয়াও জটিল হয়ে পড়তে পারে বলে দাবি করেন তিনি। সেই সময় সীমাটা কত- প্রশ্ন করা হলে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘এটা কেউ বলতে পারবে না পৃথিবীতে। বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা সম্ভব কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি তা নাকচ করে দেন। আপনি যদি বুঝে থাকেন যে টিপস টেকনোলজিটা, আপনি ইমাজিন করেন এটা ইউকের কিংস কলেজে .. অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের হাসপাতালের ওদের কোনো রোগী এরকম হয় ওরাই তাকে হেলিকপ্টারে বা ইয়ে করে ওই হাসপাতালে পাঠায়। হাইলি সিলেকটিভ। এভাবে একজন রোগীর জন্য একটা হাসপাতালকে ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধওমিক্রন ঠেকাতে দেশের সব প্রবেশপথে সতর্কবার্তা
পরবর্তী নিবন্ধনৌকা ১৭, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র ১৫