বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
চিঠিতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ‘রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখা হবে। এমতাবস্থায় আমি আপনার সরকারের কাছে তার মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য আবেদন করছি। খবর বাংলানিউজের।
গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এ আহ্বান জানান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনারের চিঠিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বলছেন, বিদেশে চিকিৎসা না পেলে দুইবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে। ওই চিঠিতে ভলকার তুর্ক বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তারসহ সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সব স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া মূলত ‘ব্যাটলিং বেগমস’ নামে পরিচিত এবং তাদের মধ্যেকার তীব্র বিরোধই গত চার দশক ধরে ১৭ কোটি মানুষের দেশটির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। ৭৮ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির প্রধান। তার বিরুদ্ধে ১৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে, যদিও ২০২০ সাল থেকে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ রয়েছে। গত মাসে তিন মার্কিন চিকিৎসক তার সার্জারি করেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য জার্মানিতে নিয়ে যেতে পরিবারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানায় এএফপি।
নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে উল্লেখ করে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের কথা রয়েছে। এর আগে বিরোধী দলগুলো একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এমন সময়ে খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মধ্যে রয়েছেন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতায় ফেরার আশা করছে বিএনপি।