বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বায়োপসি হয়েছে। তার শরীরে একটি ছোট আকারের লাম্প বা চাকা পাওয়া যাওয়ায় এই পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। রোগ শনাক্ত করতে ৭২ ঘণ্টা থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। বয়সজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত হলেও তিনি সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তার চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বায়োপসি করার এই তথ্য জানান। এর আগে দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। খবর বিবিসি বাংলার। ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলেন, তার শরীরে একটা লাম্প আছে। সেটার নেচার বোঝার জন্য পরীক্ষা করা দরকার। সেজন্য আজকে সেটার বায়োপসি করার জন্য উনাকে ওটিতে নেওয়া হয়েছে। এর ফলাফল পেতে সময় লাগে। কারণ এটা দেশে-বিদেশে নানা স্টাডি করতে হয়। সব স্টাডি আবার বাংলাদেশে করা যায় না। তবে কোথায় এই লাম্প বা চাকাটি তৈরি হয়েছে তা জানাতে রাজি হননি চিকিৎসক বা বিএনপির নেতারা।
এদিকে খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন এবং তিনি স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান ডা. জাহিদ। অপারেশনের পর বেগম জিয়ার ভাইটাল প্যারামিটারগুলো স্টেবল (স্থিতিশীল) আছে। এখন তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উনার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সূচনা হলো। বায়োপসি ডায়াগনস্টিক প্রসেসের একটি পার্ট। এর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তার পরের চিকিৎসা কী হবে সেটা ঠিক হবে। ছিয়াত্তর বছর বয়সী খালেদা বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের অধিকার। তার যে শারীরিক অবস্থা, সরকারের উচিত অবিলম্বে তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া।
এর আগে চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়া আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁত, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সে সময় সিটি স্ক্যান রিপোর্টে তার ফুসফুসে পাঁচ শতাংশে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। তারপর থেকে প্রথমে কারাগারে বিশেষ ব্যবস্থায় ও পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। এরপর কয়েক দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।