বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না মেলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিদেশ থেকে চিকিৎসক নিয়ে আসা হচ্ছে। এরই মধ্যে একজন যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসে পৌঁছেছেন, বুধবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন আরও তিন জন। এই চার জনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি, তবে তিনি ইংল্যান্ডে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত। বাকি তিন জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এই চিকিৎসকদের সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সমাদৃত বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, বিদেশি চিকিৎসক নিয়ে আসার এই উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলও এতে সায় দিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্য একজন চিকিৎসক জানান, মঙ্গলবার সকালে ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি একজন প্রবাসী বাংলাদেশি যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত। দুপুরের পর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখেও এসেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে একজন এবং রাতে আসার কথা দুই জন। এরা হলেন, হামিদ রব, ক্রিস্টোস জর্জিয়েডস এবং জেমস পি এ হ্যামিলটন। তারা সবাই জন হপকিনস ইউনির্ভাসিটি স্কুল অব মেডিসিনের স্বনামধন্য চিকিৎসক জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, তিনজনই নেফ্রোলজি, হেপাটোলজি এবং ইন্টারনাল রেডিওলজি, লিভার–কিডনি ট্রান্সপারেন্ট বিভাগের হাইলি এক্সপার্ট। তারা ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) করেন বা এ রকম (লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত) রোগী ম্যানেজ করেন, যেটি ম্যাডামের জন্য জরুরি।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দুইবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসায় টিপস জরুরি। কিন্তু দেশে এটি করার মতো বিশেষজ্ঞ এবং যন্ত্রপাতি নেই। অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ম্যাডামের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল। আজকে দুপুর ১২টার মধ্যে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন বিশ্রামে আছেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি নেত্রী। গত আড়াই মাসে কয়েক দফা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ৭৮ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদরোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে এখন লিভার সিরোসিসের অনেক জটিলতা আছে জানিয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, পেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বারবার বুকে পানি চলে আসছে। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। গত ৯ অক্টোবর বোর্ডের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, দেশে চিকিৎসার সব অপশন শেষ হয়ে এসেছে।