রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবারও সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
এর আগে কয়েকবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার গত বৃহস্পতিবার এই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেন।
পরদিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। সোমবার তা সাংবাদিকদের জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিডিনিউজ
তিনি বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে ম্যাডামের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য ম্যাডামকে বিদেশে নিতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এটি পঞ্চম আবেদন। ম্যাডামকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার জামিন এবং বিদেশে প্রেরণের জন্য সরকারের কাছে এই আবেদন করা হয়।”
দণ্ডিত খালেদার জন্য আবেদনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “একটি আবেদন দিয়েছিলেন। এটা আমাদের কিছু না। এটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এর আগে সর্বশেষ গত ৬ মে শামীম এস্কান্দার বোনকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে সেই আবেদন বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মত জানিয়েছিল আইন মন্ত্রণালয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন বলেছিলেন, “দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাইলে তাকে আবার কারাগারে ফিরে সরকারের কাছে নতুন আবেদন করতে হবে।”
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর খালেদার পরিবারের আবেদনে তাকে গত বছরের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তবে তাতে শর্ত ছিল, তাকে দেশেই থাকতে হবে।
ওই আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলে নতুন আবেদন করতে হলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফিরতে হবে বলে যুক্তি দেখান আনিসুল হক।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া ওঠেন গুলশানের বাসা ফিরোজায়। এরপর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এ বছরের মাঝামাঝিতে তিনি প্রায় দুই মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি।
এর চার মাসের মাথায় আবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। ২৬ দিন হাসপাতালে কাটিয়ে বাসায় ফেরার পাঁচ দিন পর গত ১৩ নভেম্বর তাকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান তার বোন সেলিমা ইসলাম।
এখন ওই হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৭৬ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসনকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে তার।