খালি চোখে শনিকে দেখার বিরল সুযোগ আসছে। আজ রোববার গ্রহটি পৃথিবীর বিপরীত অবস্থানে পৌঁছাবে, অর্থাৎ পৃথিবী সরাসরি সূর্য ও শনির মাঝখানে অবস্থান করবে। সেই সময় সূর্য, পৃথিবী ও শনি একটি সরলরেখায় অবস্থান করবে, যার ফলে শনিকে আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখাবে।
এ অবস্থায় শনি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসায় গ্রহটি আকাশে সবচেয়ে বড়ও দেখাবে। পূর্ণিমার চাঁদের মতোই গ্রহটি সম্পূর্ণভাবে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে। তবে এই বিরল ঘটনা প্রায় ৩৭৮ দিন পরপর মাত্র একবার ঘটে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট লাইভ সায়েন্স। এবারের বিপরীত অবস্থানে বিজ্ঞানভিত্তিক দিন পর্যবেক্ষণের পরিবেশও থাকবে একেবারে অনুকূল। ২১ সেপ্টেম্বর চাঁদ থাকবে নতুন, ফলে এর আলো শনিকে ঢেকে দেবে না। সেদিন সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রহটি পূর্ব আকাশে উদিত হবে এবং ভোরে পশ্চিমে অস্ত যাবে। পুরো রাতজুড়ে দেখা যাবে শনিকে। খবর বিডিনিউজের।
শনি খুঁজে পাওয়ার সহজ উপায় হলো মীন নক্ষত্রমণ্ডলের নিচের দিকে তাকানো। গ্রহটি এতটাই উজ্জ্বল যে খালি চোখেও চেনা সম্ভব। তবে চাইলে স্টেলারিয়ামের মতো অ্যাপ ব্যবহার করে শনিকে শনাক্ত করা যাবে। আরও ভালোভাবে দেখতে চাইলে ব্যবহার করা যেতে পারে জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক দূরবীণ বা ছোট টেলিস্কোপ। এ যন্ত্রে শনির বিখ্যাত বলয় স্পষ্ট দেখা যাবে। বিপরীত অবস্থায় শনির বলয় আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, যাকে বলা হয় সিলিগার প্রভাব।
এ সময় সূর্যের আলো সরাসরি বলয়ে প্রতিফলিত হয় এবং অসংখ্য কণার ভেতরে থাকা ছায়া মিলিয়ে যায়। এই উজ্জ্বলতা বিপরীত অবস্থানের আগে–পরে কয়েকদিন স্থায়ী থাকে। পর্যবেক্ষণকে আরও সহজ করতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃত্রিম আলো থেকে দূরে অবস্থান করতে। চোখকে অন্ধকারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অন্তত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় দিতে হবে। আর টর্চলাইট ব্যবহার করতে হলে সাদা নয় বরং লাল আলো ব্যবহার করতে হবে, যাতে রাতের দৃষ্টি অক্ষুণ্ন থাকে।
শনির উজ্জ্বল রূপ ২১ সেপ্টেম্বরের আগের এক–দুই দিন কিংবা পরের এক–দুই দিনও দেখা যাবে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এ বছর শনি পৃথিবীর বিপরীত অবস্থানে পৌঁছাচ্ছে ঠিক যেদিন অ্যান্টার্কটিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এর পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে শরৎকালীন বিষুব হবে। এর ফলে রাত আরও দীর্ঘ হতে থাকবে এবং আকাশ দেখার জন্য যথেষ্ট সময় মিলবে।