চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এ এফ রহমান হল খাবারের নিম্নমান, বিশুদ্ধ পানির সংকট, টয়লেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে আসন বরাদ্দ পেয়ে হলে উঠলেও এসব সমস্যার সমাধান হয়নি। এ নিয়ে হল প্রশাসন উদাসীন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া নানা সময় প্রভোস্টের অসহযোগিতামূলক আচরণের অভিযোগ করেন হলের শিক্ষার্থীরা। হলের সমস্যা নিয়ে সবশেষ গত বৃহস্পতিবার হলের শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
জানা যায়, বাজেট সংক্রান্ত দুর্নীতি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ শিক্ষার্থীরা খাবারের সমস্যা, বাজেট সংক্রান্ত দুর্নীতি তদন্ত, পানির সমস্যাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেন এএফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসনিক) বরাবর ৭ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেন। এতে শিক্ষার্থীরা এফ রহমান হলের নিম্নমান সহকারী কায়সারকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করার এবং হলের বাজেট বিষয়ক দুর্নীতি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, এফ রহমান হলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আমরা হলে উঠার পর থেকে প্রভোস্ট স্যারকে বলেছি। তিনি আমাদের এর জন্য আন্দোলন করার পরামর্শ দেন। জরুরি ভিত্তিতে হলের পশ্চিমপাশের টয়লেটের কাজ সম্পন্ন করা এবং আয়রণমুক্ত ও সার্বক্ষণিক নিরাপদ পানির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা, হলের মসজিদের জন্য নতুন অজুখানা স্থাপন করা, হল থেকে সেন্ট্রাল মসজিদে যাওয়ার পথ সংস্কার, নতুন সিঁড়ি স্থাপনের পদক্ষেপ নেয়া, স্থায়ী ব্যাডমিন্টন কোর্টের ব্যবস্থা করা, নতুন বেঞ্চ স্থাপনসহ হলের মাঠ সংস্কার করা, হলের বাইরে সাইকেল এবং বাইক স্ট্যান্ড স্থাপন করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা গত ২৯ অক্টোবর প্রভোস্টের সঙ্গে দেখা করেন এবং হলের সামগ্রিক উন্নয়ন বিষয়ক ২১ দফা দাবি জানান। সেসময় প্রভোস্ট কিছু বিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান এবং অন্যান্য কাজের জন্য হলের বাজেট ঘাটতির কথা বলেন। অনেকগুলো বিষয়ে প্রভোস্ট ব্যবস্থা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেছিলেন এ বিষয়গুলো হল প্রশাসনের হাতে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসন এবং প্রকৌশল বিভাগ এটার দায়িত্বে রয়েছে বলে জানান প্রভোস্ট।
লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী জানান, হলে আসন বরাদ্দের পর দীর্ঘ সময় ধরে হলের ওয়াইফাই সমস্যা, পরিচ্ছন্নতা, পানির সমস্যা, বাথরুমের কাজসহ বিভিন্ন কাজে ধীর গতির কারণে আবাসিক শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এর জন্য আমরা হল প্রশাসনকে হলের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং সংস্কার কাজের অগ্রগতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে এফ রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তছলিম উদ্দিনকে কল করা হলে তিনি মুঠোফোনে মন্তব্য করতে রাজি হননি।