বাংলাদেশ খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির নির্বাচনের ১২ দিন পর ভোট পুনঃগণনার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষতক তা ভেস্তে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ভোট পুনঃগণনার উদ্যোগ নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনা স্থগিত করা হয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ১৮ পদের বিপরীতে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। কিন্তু ভোটগ্রহণের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের পক্ষাবল্বনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ও শ্রম অধিদপ্তর তিন সভাপতি প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনার নির্দেশনা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক ও রেজিস্টার অব ট্রেড ইউনিয়ন মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরফলে নির্বাচন কমিশন গতকাল (১২ ডিসেম্বর) ভোট পুনঃগণনার বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একটি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবুল মনসুর জানান, আমাদের কোনো ধরনের অবহিত না করে নির্বাচন কমিশন একতরফাভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ জেলা প্রশাসন ও শ্রম অধিদপ্তর তিন সভাপতি প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনার নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন একজন পলাতক খুনের মামলার আসামির পক্ষে কাজ করছে বলে মনে হয়। তাই জেলা প্রশাসনের অধীনে তিন সভাপতি প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনার দাবি করেছি।
গতকাল নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে ভোট পুনঃগণনা প্রক্রিয়া স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউছুফ আলী খান মাহবুব স্বাক্ষতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও শ্রম অধিদপ্তরের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ভোট পুনঃগণনার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু অনিবার্য কারণে ভোট পুনঃগণনার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এতে করে নির্বাচনের ১২দিন পরও ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।
সমিতির সদস্যরা জানান, তিন সভাপতি প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনা করতে সমস্যা কোথায়? নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি করছে। তবে নির্বাচন কমিশনের এক সদস্য জানান, ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলাফল ওইদিন ঘোষণা হতো। শুধুমাত্র একজন প্রার্থীর কারণে ফলাফল ঝুলে গেছে। সভাপতি প্রার্থীদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা করতে হবে এমন কোনো শর্ত নির্বাচন কিংবা সমিতির সংবিধানের কোথাও নেই। অথচ একটি পক্ষ বিষয়টিকে মূখ্য করে তোলেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ বছর ধরে সমিতিতে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির পদে ছিলেন যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক। ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গণহত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। এরপরই সাধারণ ঠিকাদারদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মাহমুদুল হকে নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও আবুল মনসুরের নেতৃত্বে বিএনপি–জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।