খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ

গত বছরের চেয়ে বেড়েছে আমদানি বাজার নিম্নমুখী, রমজানে সংকট হবে না

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৪ মার্চ, ২০২২ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

রমজানের বাকি আছে আর মাত্র তিন সপ্তাহ। রমজানকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা তাদের আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্য পরিবহন ও গুদামজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখনো অনেক ব্যবসায়ীর চালান বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
সম্প্রতি সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে ২০ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করায় সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার নিম্নমুখী। এছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে রমজানের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলা, সাদা মটর, মশুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুুন ও আদার দাম।
খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের আমদানি আগের চেয়ে বেড়েছে। সাধারণত রমজান এলে শরবতের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চিনির ব্যবহারও বাড়ে কয়েক গুণ। বর্তমানে বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। এছাড়া সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার টন ছোলার চাহিদা থাকে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে ছোলা এসেছে। এর বাইরে রমজানে সাদা মটর ও মসুর ডালেরও চাহিদা বেড়ে যায়। ভোজ্যতেল, চিড়া ও খেজুরের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত খেজুর আমদানি হয় ইরান, তিউনিসিয়া, দুবাই ও সৌদি আরব থেকে। তবে খেজুরের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
গতকাল খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৭৪ টাকায়। বর্তমানে ২ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়। এছাড়া ছোলার দাম ৩ টাকা কমে ৭০ টাকা, সাদা মটর ২ টাকা কমে ৪৫ টাকা, চিড়া ২ টাকা কমে ৪২ টাকা, এলাচ ৩০ টাকা ১ হাজার ৬০০ টাকা, লবঙ্গ ২০ টাকা কমে ২ হাজার ৪০ টাকা, জিরা ৩০ টাকা কমে ৩৫০ টাকা, দারচিনি ১০ টাকা কমে ২৯৫ টাকা, পেঁয়াজ ১৫ টাকা কমে ৩৫ টাকা, চীনা রসুন ১০ টাকা কমে ৯৫ টাকা ও আদার দাম কেজিকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। অপরদিকে পাম তেলের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি ৮০০ টাকা কমে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ১০০ টাকায়। এছাড়া মণপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম ৫০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৬০০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা বলছেন, পণ্য বুকিং থেকে শুরু করে গুদামে আসা পর্যন্ত দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। অনেক সময় বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করতেও সময়ের প্রয়োজন হয়। রমজানের বাকি আছে আর দুই মাস। এখন থেকে পণ্য গুদামজাত না করলে মার্কেট ধরা কঠিন হবে। ইতোমধ্যে প্রচুর পরিমাণ ছোলা, মটর ও মসুর ডাল আমদানি হয়েছে। এছাড়া গত বছরের অনেক পণ্য গুদামে অবিক্রিত থেকে গেছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও দেশের অভ্যন্তরে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণেও আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে প্রায় পণ্যের দাম গত রমজানের তুলনায় বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার চড়া।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন আজাদীকে বলেন, চলতি বছর ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন। এখনো অনেক পণ্য আসার পথে রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা প্রচুর পণ্য গুদামজাত করেছেন। তবে বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখী। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাজার সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাজার নিয়ন্ত্রণে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে : জেলা প্রশাসক
পরবর্তী নিবন্ধদেশের ৫ ভাগ এক পাশে, অন্য পাশে ৯৫ ভাগ