খাতুনগঞ্জে কমেছে এলাচের দাম

দু্‌ই সপ্তাহে কেজিতে কমল ৬৫০ টাকা

জাহেদুল কবির | শুক্রবার , ১৬ আগস্ট, ২০২৪ at ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে অবশেষে কমছে এলাচের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে কমেছে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাওনারদারদের টাকা মেরে কয়েকজন এলাচ ব্যবসায়ী উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রভাব পড়েছে বাজারে। আগে মুখের কথায় লেনদেন করলেও এখন কেউ সেই ঝুুঁকি নিচ্ছে না। ফলে কমে গেছে এলাচের বেচাবিক্রি। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭৫০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জের একশ্রেণীর মৌসুমী ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেডিং (হাতবদল) ব্যবসার কারণে এলাচের দাম বাড়তে থাকে। বাজার চাহিদা না থাকার পরেও এসব ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে বেচাবিক্রি করে দাম বৃদ্ধি করেন। অথচ বিক্রি হওয়া এলাচ এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয়নি। কেবল ব্যবসায়ীদের গুদাম পরিবর্তন হয়েছে। এই সুযোগ অনেক ব্যবসায়ী তার কাছে যে পরিমাণ এলাচ মজুদ রয়েছে, তারচেয়ে পণ্য বিক্রি করেন। ক্রেতারা বিশ্বাস করে টাকাও পরিশোধ করে। কিন্তু পণ্য নেয়ার সময় দেখা যাচ্ছে, ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি শুরু করে বিক্রেতা। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আস্থার সংকট দেখা দেয়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরণের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে বর্তমানে বাজারে গরম মসলার তেমন চাহিদা নেই। তারপরেও অজানা কারণে সম্প্রতি লাগামহীন দাম বাড়ে।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে এলাচের বাজার একদম ঠান্ডা। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে এলাচের চাহিদা নেই। ক্রেতা সংকটের কারণে এলাচের টানা দরপতন হচ্ছে। আসলে খাতুনগঞ্জে সম্প্রতি একটি নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে নগদ টাকা ছাড়া কেউ লেনদেন করছেন না। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আবার অনেকের টাকা আটকে আছে। সব মিলিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে একদম নেই বললেই চলে।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এলাচ নিত্যপণ্য নয়। তারপরেও গত কয়েক মাস ধরে এলাচের দামবৃদ্ধি এবং পাওনারদের টাকা রেখে ব্যবসায়ীর লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার ঘটনাও বাজারে প্রভাব পড়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতিদিনের রান্নায় কেউ এলাচ বা গরম মসলা নিয়মিত ব্যবহার করে না। তারপরেও একশ্রেণীর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে গরম মসলার ডিও স্লিপ বেচাকেনা করে অস্বাভাবিকভাবে দামে বৃদ্ধি করেছেন। যদিও এখন দাম নিম্নমুখী। তবে তারা যা মুনাফার করার ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন। মাঝখানে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘বস্তায় করে টাকা যেত’ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায়
পরবর্তী নিবন্ধহাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু