খাতুনগঞ্জে কমছে ভোজ্যতেলের দাম

দুই সপ্তাহে সয়াবিন-পাম তেল মণে কমল ১৫০ টাকা

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে কমছে ভোজ্যতেলের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাম তেল এবং সয়াবিন তেলের দাম প্রতি মণে কমেছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের বুকিং দর কমার কারণে ভোজ্যতেলের বাজার এখন নিম্নমুখী। তবে ভোক্তারা বলছেন, পাইকারি বাজারে কমলেও ভোক্তারা এর কোনো ধরনের উপকার পাচ্ছে না। কারণ ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নির্ধারণ করে ভোজ্যতেল বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া গত মাসে পুনরায় ব্যবসায়ীরা পাম ও সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি করেন। তবে ভোজ্যতেলের বাজারে প্রশাসনের নজরদারির অভাবে প্রায় সময়ই উঠানামা করে।

গতকাল খাতুনগঞ্জের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৫০ টাকায়। সেই তেল মণে ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৯০০ টাকায়। এছাড়া অন্যদিকে বর্তমানে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৬ হাজার ৭৫০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ আগে এই তেল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোজ্যতেলের বাজার এখনো গুটিকয়েক শিল্প গ্রুপের কাছে জিম্মি। তারা ইচ্ছে মতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকার যদি ভোজ্যতেলের আমদানি উন্মুক্ত করে দেয়, তবে চিনির বাজারে ভোজ্য তেলের বাজারেও স্থিতিশীলতা আসবে।

আশরাফুল আলম নামে একজন ভোক্তা জানান, আমাদের দেশের ভোজ্যতেলসহ সব ধরণের ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জিতে চলে। তাই বুকিং দর যে হারে কমে, সে হারে দাম কমায় না। আবার বৃদ্ধি হলে দ্রুত বৃদ্ধি করে। প্রশাসন মাঝে মাঝে আকস্মিক অভিযানে জরিমানাও করেন। সবচেয়ে বড় সমস্যার বিষয় হচ্ছেখাতুনগঞ্জের ডিও প্রথা নামে এক ধরণের অবৈধ পণ্য বেচাকেনা চলে। যাতে একজন ক্রেতা শুধু একটি কাগজ কেনেন। যেখানে কেবল পণ্যের নাম ও দাম লেখা থাকে। এতেও বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তাই সরকারকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। তবে দাম কখনো অস্থির হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১ খাল পুনরুদ্ধার প্রস্তাবনা জমা দিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধশীঘ্রই কয়েকটি ডায়ালাইসিস মেশিন প্রদানের আশ্বাস