খাতুনগঞ্জে এলাচের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি

দুই মাসে বাড়ল ১৬০০ টাকা

জাহেদুল কবির | সোমবার , ২৭ মে, ২০২৪ at ৭:৩৭ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এলাচের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি হয়েছে। দুই মাস আগে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। বর্তমানে সেই এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ১০০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। সাদা কাগজে পণ্যের নাম ও দাম লিখে হাজার হাজার টন এলাচ বেচাকেনা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাসায় এটিকে ‘স্লিপ বাণিজ্য’ বলা হয়। স্লিপ বাণিজ্যে প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের ‘হাওয়া’র ওপর লেনদেন হয়। যেখানে শুধু স্লিপ ও টাকার হাতবদল হয়। এই স্লিপে কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা থাকে না। ফলে প্রশাসন অভিযান চালালেও কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোন ব্যক্তি সেই স্লিপ ইস্যু করেছেন সেটি জানা সম্ভব হয় না। এভাবে স্লিপ বাণিজ্যের প্রভাবে খাতুনগঞ্জে গতকাল প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ১০০ টাকায়। স্লিপে লেনদেন হওয়া এসব এলাচের মধ্যে এক কেজিও খাতুনগঞ্জের বাইরে সরবরাহ হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গরম মসলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাতুনগঞ্জে তেল, চিনি ও গমের স্লিপ বেচাকেনায় জড়িত কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী এলাচের বাজার অস্থির করে তুলেছেন। দৃশ্যমান পণ্য কেনাবেচা না করেও প্রতিদিন এলাচ নিয়ে এক প্রকার জুয়া খেলছেন তারা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতেমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটি ঠিক, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। তবে বাজার চাহিদা এবং মসলার মজুদ হিসেব করলে এই মুহূর্তে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলা ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খাতুনগঞ্জের এক শ্রেণির ডিও বা স্লিপ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক প্রকার জুয়া খেলেন। তারা নিজেদের মধ্যে ট্রেডিং করে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম ওঠানামা করান। দেখা যাচ্ছে, বাজারে যে পরিমাণ এলাচ মজুদ রয়েছে, তার চেয়ে বেশি স্লিপ বিক্রি হচ্ছে। যে দরে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করেন। এদের কেউই প্রকৃত মসলা ব্যবসায়ী নন। দিনে যে পরিমাণ এলাচ কেনাবেচা হয়, এর মধ্যে এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয় না। এসব পণ্য কেবল গুদাম পরিবর্তন হয়।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, এলাচের বাজারে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বাড়ার কারণে দাম স্থির থাকছে না। তবে এটা ঠিক, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দরও বেড়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহুমকি-ধমকির পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সরগরম পটিয়া
পরবর্তী নিবন্ধ১০ বছর পর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা