খাতুনগঞ্জে এলাচের দরপতন

এক মাসে কেজিতে কমেছে ১ হাজার ৪শ টাকা

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১০ জুলাই, ২০২৪ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ সময় উত্তাপ ছড়ানোর পরেও অবশেষে পাইকারিতে কমছে এলাচের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে কমেছে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত মাসের প্রথম সপ্তাহে খাতুনগঞ্জের সোনা মিয়া মার্কেটের নুর ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী নাজিম উদ্দিন এলাচ বিক্রির প্রায় ৫০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এই ঘটনার জেরে এলাচের বাজারে ধস নামে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। ফলে এলাচের কেজি ৪ হাজার ২০০ টাকা থেকে কমতে কমতে বর্তমানে ২ হাজার ৮০০ টাকায় নেমে আসে।

খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জের একশ্রেণীর মৌসুমী ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেডিং (হাতবদল) ব্যবসার কারণে এলাচের দাম বাড়তে থাকে। বাজার চাহিদা না থাকার পরেও এসব ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে বেচাবিক্রি করে দাম বৃদ্ধি করেন। অথচ বিক্রি হওয়া এলাচ এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয়নি। কেবল ব্যবসায়ীদের গুদাম পরিবর্তন হয়েছে। এই সুযোগে অনেক ব্যবসায়ী তার কাছে যে পরিমাণ এলাচ মজুদ রয়েছে, তার চেয়ে পণ্য বিক্রি করেন। ক্রেতারা বিশ্বাস করে টাকাও পরিশোধ করে। কিন্তু পণ্য নেয়ার সময় দেখা যাচ্ছে, ডেলিভারি দিতে গড়িমসি শুরু করে বিক্রেতা। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আস্থার সংকট দেখা দেয়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরণের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে বর্তমানে বাজারে গরম মসলার তেমন চাহিদা নেই। তারপরেও অজানা কারণে সম্প্রতি লাগামহীন দাম বাড়ে।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, এলাচের বাজারে বর্তমানে ক্রেতা নেই। ক্রেতা সংকটের কারণে গত এক মাস ধরে এলাচের টানা দরপতন হচ্ছে। আসলে খাতুনগঞ্জে সম্প্রতি একটি নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে নগদ টাকা ছাড়া কেউ লেনদেন করছেন না। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আবার অনেকের টাকা আটকে আছে। সব মিলিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য একদম নেই বললেই চলে।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এলাচের ঘটনার পর থেকে ভোগ্যপণ্যের বাজারে এক ধরণের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বেচাবিক্রির অবস্থা খারাপ।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গরম মসলা নিত্যপণ্য না। প্রতিদিনের রান্নায় সেই মসলা ব্যবহার কেউ করে না। অথচ একশ্রেণীর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে গরম মসলার ডিও স্লিপ বেচাকেনা করে অস্বাভাবিকভাবে দামে বৃদ্ধি করেছেন। যদিও এখন দাম নিম্নমুখী। তবে তারা যা মুনাফার করার ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন। মাঝখানে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক কাউন্সিলর মানিক ও জাগো ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
পরবর্তী নিবন্ধপরিবহন ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা