খাগড়াছড়িতে শিক্ষিকা খুনের অভিযোগে স্বামীর ২ দিনের রিমান্ড

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ২৬ জুলাই, ২০২৩ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে এক শিক্ষিকাকে খুনের অভিযোগ ওঠার পর তার স্বামীর দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে গতকাল মঙ্গলবার জেলা জজ আদালতের বিচারক তাফরিমা তাবাসসুম দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উৎপল বিশ্বাস।

নিহত এশা ত্রিপুরা মাটিরাঙা উপজেলার তপ্ত মাস্টার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরা। ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের দুইটি সন্তান রয়েছে।

জানা যায়, গত শুক্রবার ভোরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে এশা মারা গেছেন দাবি করে তার লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বামী উদ্দীপন এবং প্রতিবেশীরা। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা এটিকে ‘স্ট্রোকে’ মৃত্যু নয় বলে জানান। এ সময় উদ্দীপন লাশের ময়নাতদন্ত না করার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করতে বাধ্য করে। স্বজনদের অভিযোগ, এশার লাশ হাসপাতালে না নিয়ে স্বামী উদ্দীপন তার বাড়ি পানছড়ির কুড়াদিয়া ছড়ায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে প্রতিবেশিদের চাপে হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ ঘটনার পরদিন খাগড়াছড়ি সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত এশা ত্রিপুরার ভাই খোকা রঞ্জন ত্রিপুরা। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার বোনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। কে বা কারা পরিকল্পিতভাবে তার বোনকে হত্যা করেছে। পরে শনিবার বিকালে এশার স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্বজনদের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়, উদ্দীপন জানায় ভোর ৪টার দিকে এশা ‘স্ট্রোক’ করে বাথরুমে পড়ে যান। অথচ এশার প্রতিবেশী খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সুভল জ্যেতি চাকমা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দাবি করেন, তিনি রাত দেড়টার দিকে এক নারীর চিৎকার শুনতে পেয়েছেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উৎপল বিশ্বাস জানান, নিহতের শরীরের একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। এটা দেখে আমাদের মনে হয়েছে এটি স্ট্রোক হতে পারে না। তাকে খুন করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পুলিশকে লিখিতভাবে এশা ত্রিপুরার লাশের বিষয়ে অবগত করেন এবং এটি স্ট্রোকজনিত মৃত্যু নয় বলে জানান।

পরিদর্শক উৎপল আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের রাতে এশা ত্রিপুরার স্বামী ও শিশু সন্তানরা ছাড়া ওই বাসায় আর কেউ ছিল না। সোর্সের দেওয়া তথ্য এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে উদ্দীপন ত্রিপুরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনো ময়নাতদন্ত রির্পোট পাওয়া যায়নি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১০০ টাকার স্যালাইন ৫০০ টাকায় বিক্রি
পরবর্তী নিবন্ধআন্দরকিল্লা ও জমিয়তুল ফালাহ্‌ মসজিদের সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু করা হবে