খাগড়াছড়িতে বিএনপির অবরোধ দুর্ভোগে পর্যটকরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ৮ জুন, ২০২২ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে বিএনপির ডাকা অবরোধে ঢাকাসহ সারা দেশের সাথে দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা অভ্যন্তরে কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহনও। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাছ কেটে ও টায়ারে আগুন দিয়ে অবরোধ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ কর্মসূচি শেষ হবে আজ বুধবার সকাল ৬ টায়। গত ৪ জুন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাড়ি ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় বিএনপি এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। এদিকে অবরোধ কর্মসূচিতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাজেকগামী পর্যটকরা। সকাল থেকে সাজেকে যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশী পাহারায় পর্যটকরা সাজেকে পৌঁছে।

ঢাকা থেকে সাজেকে আসা পর্যটকরা জানান, অবরোধের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। সকালে গাড়ি থেকে নামার পর জানতে পারি এখানে অবরোধ দিয়েছে। অবরোধের মধ্যে সাজেকে যাচ্ছিনা। ওখানে (সাজেকে) আমাদের কটেজেও বুকিং দেয়া আছে। অবরোধের মধ্যে এসে এখন ভোগান্তিতে পরেছি।

সাজেক কাউন্টারের লাইনম্যান মো. আরিফ জানান, বিএনপির ডাকা অবরোধে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই আমরা সাজেকের উদ্দেশ্য কোনো গাড়ি যেতে দিচ্ছি না। পর্যটকরা দুর্ভোগে পরেছে এটা সত্য। কিন্তু প্রশাসন যদি কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমরা গাড়ি ছাড়তে পারব না।

সকালের দিকে জেলা শহরের মহাজন পাড়া এলাকায় প্রধান সড়কে বিএনপির সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের ডাল ফেলে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আগুন নিভিয়ে ও গাছের ডাল সরিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়।

এ অবরোধে সকালে জেলা শহরের স্বনির্ভর এলাকা, বাস স্টেশন, চেঙ্গী স্কয়ারসহ বেশ কিছু স্থানে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল তেমন একটা দেখা যায় নি। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে পৌর শহরে অটো রিকশা চলাচল করেছে। এছাড়া চলমান অবরোধের মাঝেও কর্মস্থল খোলা থাকায় বের হতে হয়েছে কর্মজীবীদের। পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে কর্মস্থলে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রশিদ জানান, সকাল থেকে অবরোধ চলাকালে যেনো কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে সে দিকে তৎপর রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। জেলা সদরের বাড়তি পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পর্যটকদের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশী পাহারায় তাদের সাজেক যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টায় পুলিশী পাহারায় ২১টি পর্যটকবাহী গাড়িকে নিরাপত্তা দিয়ে সাজেকে পৌঁছে দেয়া হয়।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান খোকন বলেন, অবরোধের মধ্যে পরিবহন শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাচ্ছে না। আমাদের গাড়ির কাউন্টারগুলো খোলা রাখলেও টিকেট বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গাড়ি ছাড়ব। যানমালের রক্ষার্থে যান চলাচল বন্ধ রেখেছি।

এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে মাটিরাঙা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদি, মাটিরাঙ্গা যুবদলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে হামলা করেছে দুবৃর্ত্তরা। এছাড়া দীঘিনালা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফরাজিকে হামলা করে আহত করা হয়। সকাল থেকে অবরোধে পালিত হচ্ছে। অবরোধে জনসমর্থন রয়েছে। বিএনপি নেতা কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় সাধারণ মানুষও বিক্ষুদ্ধ। আওয়ামী লীগ মানুষের সমর্থন হারিয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, জনগণ বিএনপির তথাকথিত অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাখান করেছে। রাস্তায় যানবাহন চালিয়েছে। পর্যটকরা সাজেকে যাতায়াত করেছে। আমাদের কোন নেতাকর্মী বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে বলে আমার জানা নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালয়েশিয়ায় পি কে হালদারের ৭ বিলাসবহুল ফ্ল্যাট
পরবর্তী নিবন্ধনলকূপের পাইপ থেকে ৬ দিন ধরেই বের হচ্ছে গ্যাস