খাগড়াছড়িতে বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ২ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তদের অধিকাংশই সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার বাসিন্দা। দেরিতে চিকিৎসা নেওয়ায় রোগ নিরাময়ে বাড়ছে জটিলতা। ইতোমধ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক রোগী। ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ায় জ্বর উঠলে দ্রুত রোগ নির্ণয়ের অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসাকেরা।

গত ছয় মাসে খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৪০ জন। যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে রোগ শনাক্তে দেরি হওয়ায় সিবিয়ার ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হয়ে জুন মাসে রুবেল হোসেন নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তদের অধিকাংশই দীঘিনালা, লক্ষীছড়ি, সাজেকসহ দুর্গম ও সীমান্তবর্তী এলাকার। দুর্গম এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে না পারায় বাড়ছে জটিলতা। পাহাড়ের দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মশার উপদ্রব বেশি হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে ম্যালেরিয়া পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত ম্যালেরিয়া পরীক্ষার পরামর্শ নার্স ও চিকিৎসকদের।

দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ নার্সরা জানান, আমাদের এখানে যেসব রোগীরা আসে তাদের অধিকাংশই দুর্গম এলাকার। তারা এখানে আসার সাথে সাথে আমরা চিকিৎসা দিই। ঝুঁকিপুর্ণ রোগীদের আমরা জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করি।

দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার বলেন, জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত এখানে ম্যালেরিয়া রোগী বেড়েছে। যখনই কারো যদি জ্বর হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পরীক্ষা করা যাবে। আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ আছে। বর্ষায় ম্যালেরিয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। চলতি বছরের কেবল জুন মাসেই ১৭৬ জন রোগীর ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। জুলাই মাসে শনাক্ত হয়েছে অন্তত ৯০ জন। জুন মাসে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পানছড়ি উপজেলা সদরে রুবেল হোসেন নামে এক রোগী চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়।

ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি এড়াতে মশার উৎসস্থল ধ্বংস, মশার কামড় এড়ানো উপযোগী পোশাক পরিধান ও মশারি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ড. মোহাম্মদ ছাবের। তিনি বলেন, কেউ যাতে সিবিয়ার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত না হয়। সেক্ষেত্রে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। যেহেতু পাহাড়ি এলাকা অনেকে কাজে বের হয় সেক্ষেত্রে মশা যাতে না কামড়ায় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। মশারি ব্যবহার করতে হবে। এর আগে ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমার্কিন শুল্ক কমানোয় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়বে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ার বদরখালীতে যুবককে গুলি করে হত্যা