খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হলো ‘সংস্কৃতির দ্বার’

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ি ও সাজেকে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকের আগমন। পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে তারা। তবে এতোদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ছিল না পর্যটকদের। এবার দীর্ঘদিন পর হলেও পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় বর্ণিল সংস্কৃতির সাথে পর্যটকদের সেতুবন্ধন করার উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউট। এখন থেকে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে আগতদের জন্য পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার সন্ধ্যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনয়াতনে ঘণ্টাব্যাপী চলবে বর্ণিল এই আয়োজন। এতে পর্যটকরা পাহাড়ে বেড়ানোর পাশাপাশি পাহাড়ি মানুষের শিল্প, সংস্কৃতি, সংগীত ও নৃত্য উপভোগ করতে পারবেন। সপ্তাহের দু’দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনয়াতনে পরিবেশন করা হয় চাকমা ভাষার গীতিনাট্য রাধামন ধনপুদি। চাকমা প্রেমকে উপজীব্য করে গীতি নাট্যটি পরিবেশন করছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিল্পীরা। গত ৬ নভেম্বর পর্যটকদের জন্য সাংস্কৃতিক আয়োজনের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে প্রচুর পর্যটক আসে। এরা সারাদিন ঘোরাঘুরি করার পর রাতে অলস সময় কাটান। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের এমন আয়োজনের মাধ্যমে পর্যটকরা এখানকার চাকমা, ত্রিপুরা এবং মারমা সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে পাহাড়ি সংস্কৃতি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করবে।’
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক তুষার খান জানান, ‘আমরা সাজেক ও খাগড়াছড়িতে বেড়াতে এসেছি। সারাদিন ঘোরাঘুরির পর চাকমা ভাষার গীতিনাট্য রাধামন ধনপুদি গীতিনাট্য উপভোগ করতে আসলাম। এখানকার আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পাহাড়ে বেড়ানোর পাশাপাশি এখানকার মানুষের জীবন সংস্কৃতির সাথে পরিচয় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।’
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট পরিচালক জিতেন চাকমা বলেন, ‘আমরা পর্যটকদের জন্য চাকমা ভাষার গীতিনাট্য রাধামন ধনপুদি পরিবেশন করছি। প্রতি শুক্রবার ও শনিবার এটি পরিবেশন করা হয়। এছাড়া পর্যটকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে বড় পরিসরে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হবে। এ সময় তিনি পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি পর্যটকদের পাহাড়ি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার অনুরোধ জানান।’
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সাথে পর্যটকদের সম্মিলিন ঘটবে। পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি অনেক স্থানীয় মানুষের যাপিত জীবন, সংস্কৃতির সাথে পরিচয় হওয়ার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিষ ঢেলে এক মালিকের দুই প্রজেক্টের মাছ নিধন
পরবর্তী নিবন্ধশ্যামা পূজা ও দীপাবলী আজ