খাগড়াছড়িতে প্রাণী কল্যাণ আইন ভেঙে কুকুর নিধনে অনুমোদন দিয়েছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। সেই অনুমোদনের কপি হাতে নিয়ে পৌরসভা থেকে ফাঁদ পেতে কুকুর ধরছে একটি চক্র। সে সব কুকুর সীমান্তবর্তী উপজেলা পানছড়ির দুধক ছড়া হয়ে পাচার হচ্ছে ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার অনুমোদনের চিঠির সূত্রে জানা যায়,‘ আবেদনের প্রেক্ষিতে ৬ সেপ্টেম্বর পানছড়ি উপজেলার কলজয় ত্রিপুরাকে কুকুর নিধনের অনুমোদন দেয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় যত্রতত্র ভাসমান বেওয়ারিশ কুকুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদের জন্য গৃহপালিত পশু, সাধারণ মানুষ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে পৌর এলাকা থেকে বেওয়ারিশ কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হলো।
কুকুর নিধন চক্রের প্রধান কলজয় ত্রিপুরা বলেন, এ পর্যন্ত পৌর শহর থেকে ২০টি কুকুর ধরেছি। এসব কুকুর দুধক ছড়া হয়ে সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পাঠানো হয়। এখানে কুকুর পরিবহন বাবদ আমি আড়াই হাজার টাকার মতো গাড়ি প্রতি ভাড়া পাই। আর যারা কুকুর নিধন করে তারা দৈনিক ৭শ থেকে ৮শ টাকা পায়। ২০১৯ সালে করা প্রাণী কল্যাণ আইনে বলা আছে, মালিকাবিহীন কোনো প্রাণী নিধন বা স্থানান্তর দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া ২০১৪ সালে করা একটি প্রাণী প্রেমী সংগঠনের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আদালতের।
পিপলস ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা রাকিবুল হক এমিল জানান, দেশের প্রচলিত আইনে মালিক বিহীন কুকুর নিধন ও অপসারণ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। একই সাথে কোন প্রাণীকে ধরে ভারতে পাচার করা অবৈধ। মিজোরাম সরকারও কুকুরের মাংস বিক্রি অবৈধ ঘোষণা করেছে। সেখানে একজন জনপ্রতিনিধি এবং সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র কিভাবে অবৈধ কাজের প্রকাশ্য অনুমোদন দেন? প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ মেয়রকেও এই অনুমোদন দেয়ার অধিকার দেয়নি।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, আমি সচেতনভাবে কুকুর নিধনের অনুমতি দিইনি। এটা অনিচ্ছাকৃত। অফিসের বিভিন্ন ফাইল স্বাক্ষর করার সময়ে কখন যে কুকুর নিধনের অনুমোদনের কপিতে স্বাক্ষর করেছি তা আমার জানা নেই। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। রাষ্ট্র যে প্রাণী কল্যাণ আইন করেছে আমি তার পক্ষে আছি।