খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পাহাড়ে দুই মাসে ৮ খুন

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি | শনিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে গত দুই মাসের কম সময়ে ৮ ব্যক্তি খুন হয়েছে। নিহতরা সকলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠক ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টইউপিডিএফের নেতাকর্মী। নিহতদের মধ্যে ৮ জনের ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে খাগড়াছড়িতে ও বাকী দুই জন খাগড়াছড়ির লাগায়ো উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের অনিল পাড়ায় একটি বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পিসিপির সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, ইউপিডিএফ সংগঠক রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা (রহিনসা) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহসভাপতি লিটন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা।

এই ঘটনার দেড় মাসের ব্যবধানে ২৩ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির মহালছড়ির দুর্গম দুরছড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন রবি কুমার চাকমা ও বিমল চাকমা। খবর পেয়ে ওই এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে মহালছড়ি থানা পুলিশ। এই দুটি হত্যাকাণ্ডের পর গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফকে দায়ী করেছে মূল ইউপিডিএফ। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে মূল ইউপিডিএফ থেকে বের হয়ে আসা বেশ কিছু নেতা গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ গঠন করে।

এদিকে মহালছড়ি হত্যাকাণ্ডের রেশ না কাটতেই ৪ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির লাগায়ো উপজেলা বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের ব্রিজপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় দীপায়ন চাকমা ও আশুক্য চাকমা ওরফে আশীষ নিহত হয়। হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করলেও সংগঠনটি তা অস্বীকার করে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের শীর্ষ নেতা শ্যামল চাকমা হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের পার্টি শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বিশ্বাসী। শান্তিপূর্ণ উপায়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করছি। রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা সংঘাত পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। আলাপআলোচনার মাধ্যমে সংঘাত কিছুটা হলেও কমানো যেতে পারে।’

ইউপিডিএফ জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, ‘ইউপিডিএফ যেহেতু সবসময় নিপীড়ন নির্যাতনের বিপক্ষে ছিল তাই তাদের ওপর দমন পীড়নও বেশি হচ্ছে। এসব হত্যাকাণ্ডে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ ও জেএসএস জড়িত।’

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘যে সব সহিংসতার ঘটনা হয়েছে সেসব ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধদিনদুপুরে ইউপি মেম্বারকে পিটিয়ে জখম
পরবর্তী নিবন্ধমদ্যপের দায়ের কোপে মারা গেলেন বৃদ্ধ