নতুন বছরকে বরণ করে নিতে খাগড়াছড়িতে মারমা সমপ্রদায়ের মাহা সাংগ্রাইং উপলক্ষ্যে ছয় দিনব্যাপী উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা সদরের পানখাইয়া পাড়ার বটলতা এলাকায় মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ‘আলারি’ ও ‘দঃ’ খেলার আয়োজন করে মারমা উন্নয়ন সংসদ। এতে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে উৎসবের সূচনা দিনে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ডিসপ্লে প্রদর্শন করে মারমা নৃত্যশিল্পীরা। পরে উদ্বোধন করা হয় মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ‘দঃ’ ও ‘আলারি’ খেলা। আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, সাংগ্রাইংয়ে যে উৎসব চলছে এটির মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে যুক্ত হয়েছে। গোটা বাংলাদেশের জন্য এটি অনুকরণীয়। এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে উঠবে এবং সহাবস্থান তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতিচ্ছবি। আমরা যে অর্ন্তভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই তাতে এ ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
মারমা উন্নয়ন সংসদের সভাপতি মংপ্রু চৌধুরী বলেন, মারমা সংস্কৃতি লালন, পালন, উৎকর্ষ ও সুরক্ষার জন্য আমরা প্রতিবছরই এমন আয়োজন করি। ছয় দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে আগামী ১৪ এপ্রিল রি–আকাজা বা মৈত্রী পানি বর্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিহাস মতে অতীতে মারমাদের খুবই সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে; বর্তমানে সেটা বিকৃতি হচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি ও ক্রীড়াকে সমুন্নত ও ধরে রাখার জন্য এই প্রয়াস।
এদিকে সাংগ্রাইংসহ বৈসাবি ও বাংলা নবর্বষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা পুলিশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে প্রতিদিন শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজন চলছে। উৎসবকে নির্বিঘ্ন রাখতে পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। বিশেষ করে অনুষ্ঠানস্থলে পুলিশের টিম থাকবে। এছাড়া উৎসব দেখতে দেশ–বিদেশের পর্যটকেরা এখানে আসবেন; তাদের নিরাপত্তা পুলিশ দিবে। উৎসবে অংশ নিয়েছে মারমা নারী–পুরুষ, তরুণ–তরুণী ও শিশুরাও। এ সময় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ‘আলারি’ ও ‘দঃ’ খেলায় অংশ নেয় তারা। আগামী ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে সাংগ্রাইংয়ের মূল আর্কষণ রি–আকাজা বা মৈত্রী পানি বর্ষণ।