পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ণিল এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সাঁওতাল জনগোষ্ঠির বিভিন্ন বয়সী মানুষ। নতুন বছরকে বরণ ও পুরনো বছরের বিদায় উপলক্ষ্যে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশ নেয় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় চেঙ্গী স্কয়ার থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি নিউজিল্যান্ড মাঠে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে ত্রিপুরাদের গরিয়া নৃত্য পরিবেশন করা হয়। নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির স্বকীয়তায় রক্ষায় এমন আয়োজন বলছে আয়োজকরা।
পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই বৈসু–সাংগ্রাই–চাংক্রান–বিজু–বিহু–বিষু–পাতা উপলক্ষ্যে এ শোভাযাত্রায় আয়োজন করে সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটি। বছর ঘুরে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া অন্বেষা তালুকদার বলেন, কয়েকদিন পরেই আমাদের ফুল বিজু। তার আগেই আজকে আগাম শোভাযাত্রা বের হয়েছে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ অংশ নিয়েছেন। বৈসাবি উপলক্ষ্যে দুই সপ্তাহব্যাপী মেলা হচ্ছে। মেলায় আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার ও খাবার পাওয়া যাচ্ছে। মেলায় অংশ নেওয়া মারমা তরুণী উইলিপ্রু মারমা বলেন, শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বন্ধুরা মিলে এসেছি। ট্রাকে করে গান করেছি। অনেক মানুষ অংশ নিয়েছে। খুবই কালারফুল একটা প্রোগ্রাম হয়েছে।
নিজেদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি স্বকীয়তা রক্ষায় এমন উদ্যোগ প্রতিবছরই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ভুলাস ত্রিপুরা বলেন, আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য আমাদের এই আয়োজন। আজকে প্রায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সাঁওতালও অংশ নিয়েছে। এছাড়া শোভাযাত্রাকে বর্ণিল করতে বান্দরবানের মুরং শিল্পীরাও অংশ নিয়েছে।
বৈসাবি উপলক্ষ্যে সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের নিউজিল্যান্ডের সবুজ মাঠে চলছে মেলা। আগামী ১১ এপ্রিল মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বৈসাবি উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে পুলিশ। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, বৈসাবি উপলক্ষ্যে সাং মেলা, র্যালি, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাসহ বিভিন্ন আয়োজন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে পুলিশ বাড়তি সর্তকতা নিয়েছে। আশাকরি আমরা ভালোভাবে আয়োজন শেষ করতে পারব।