আগামীকাল (মঙ্গলবার) খাগড়াছড়িতে দুইটি বড় প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ‘রামগড় স্থল বন্দর ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আবাসন প্রকল্প’ উদ্বোধনের কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে চিঠি এসেছে। প্রধানমন্ত্রী ১৪ নভেম্বর ভার্চুয়ালি রামগড় স্থলবন্দরের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন করার সাথে সাথে স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। ১৯৬৯ সালের শুল্ক আইনে রামগড় শুল্ক স্টেশনের সীমানা নির্ধারণ, একই শুল্ক স্টেশনে আমদানি–পণ্য উঠানো ও নামানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান হিসেবে নির্ধারণ এবং একই সীমানাভুক্ত স্থানকে পাবলিক ওয়্যারহাউজিং স্টেশন ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃক বহিঃগমনাগমন যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য রামগড় স্থলবন্দরে যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে চিকিৎসা ও পর্যটন খাত আরো সমৃদ্ধ হবে। সহজেই পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী পারাপার করা যাবে।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন বাস্তবায়িত বিভিন্ন অবকাঠামো ও উন্নয়ন পরিষেবাসমূহের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌরসভা কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আবাসন প্রকল্প’ও উদ্বোধন করবেন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স রুমে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সার্বিক প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।
এদিকে ‘বহুল প্রত্যাশিত’ রামগড় স্থলবন্দর উদ্বোধন হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি কংজরী চৌধুরী বলেন, রামগড় স্থলবন্দর শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যই নয় আর্ন্তজাতিকভাবে দুই দেশেই লাভবান হবে। ভারতের সেভেন সিস্টারর্স রাজ্যগুলো–ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মিজোরামের সাথে সড়ক যোগাযোগ তৈরি হবে। ভারত যেহেতু চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বিভিন্ন পণ্য রামগড় স্থলবন্দর হয়ে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে নিয়ে যাবে সেক্ষেত্রে আমরা লাভবান হবো। ইমিগ্রেশন চালু হলে রামগড়ের স্থানীয় অর্থনীতি বিকাশের পাশাপাশি ব্যবসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের আওতায় নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আবাসন প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পে মোট ভবন ১৫টি। দুইতলা বিশিষ্ট প্রতি ভবনে ৪টি করে পরিবার থাকতে পারবে। প্রতিটি পরিবারের জন্য রয়েছে দুইটি বেড রুম, একটি ডাইনিং রুম, রান্নাঘর ও টয়লেট।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের আবাসন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এতে আমরা গর্ববোধ করছি। ইতোমধ্যে আবাসন প্রকল্পে কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে আমাদের কাছে দুই শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। যাচাইবাছাই করে ৬০ পরিবারের হাতে চাবি তুলে দেয়া হবে। একইসাথে
উপকারভোগীদের হাতে ঘরের দলিলও তুলে দেয়া হবে। প্রতিবন্ধী, বিধাব, অসহায় এবং সত্যিকার অর্থে যাদের আবাসন প্রয়োজন তারাই এখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না।