চন্দনাইশের পাহাড় ও নদীঘেরা একটি ইউনিয়ন ধোপাছড়ি। এটি উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও এই ইউনিয়নের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে এখনো হয়নি সহজ যোগাযোগের কোনো সুবিধা। আধুনিক এই যুগেও ধোপাছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো নৌকা। অথচ নদী পার হয়ে সাতকানিয়ার কেরানীহাট হয়ে চন্দনাইশ সদরে আসতে ধোপাছড়িবাসীর সময় লাগে আড়াই থেকে ৩ ঘন্টা।
যুগের পর যুগ স্থানীয় জনগণ সড়ক যোগাযোগের অপ্রতুলতার কারণে নদী পথে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে নদী পথে যাওয়ার সময় অনেক রোগী পথেই মারা যায়।
তাছাড়া এ অঞ্চলে কৃষকদের উৎপাদিত সবজি ঠিকমতো বাজারজাত করতে না পারায় প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
তাই সহজ যাতায়াতের জন্য বিগত কয়েক বছর ধরে খাঁনহাট-ধোপাছড়ি-বান্দরবান সড়কটি এ ইউনিয়নের জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
গত বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে ভেঙ্গে তছনছ হয়ে পড়ে। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু করে। কিন্তু বনবিভাগ সড়কটি সংস্কারে বাধা প্রদান করায় আশাহত হয়ে পড়েছে সুবিধাবঞ্চিত এই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।
তাই সড়কটি সংস্কারে বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল ১ মে উক্ত সড়কের জব্বার মেম্বারের বাড়ির সামনে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে কয়েক হাজার মানুষ।
ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস ছালাম।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলিম। আলোচনায় অংশ নেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. দুলাল কান্তি দে, আবদুল মোনাফ, প্রধান শিক্ষক মো. ইসহাক, শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি সদস্য মুজিবুল হক খোকা, জয়নাল আবেদীন, আমানত হোসেন, আশরাফ ভুইয়া, আবদুল করিম, টিপু দাশ, কবির আহমদ, নাছির উদ্দীন, জাহানার বেগম, সাবেক মেম্বার আবদুল জব্বার, জমির উদ্দীন, মোস্তাক আহমদ সওদাগর, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সোহেল, ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, লাকি আকতার, মো. শাহাজাহান, আবদুল করিম, যুবলীগ নেতা সৌরভ বাবু, ছাত্রলীগ নেতা নাঈম রহমান, এটিএম সেলিম, এসএম মামুন, হামিদুর রহমান, বোরহান উদ্দীন, মো. সোলাইমান, বিশ্ব চন্দ্র ত্রিপুরা, রুদ্ধ মনি ত্রিপুরা প্রমুখ।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলিম বলেন, খাঁনহাট-ধোপাছড়ি-বান্দরবান সড়কটি ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে জনগণের জন্য উম্মুক্ত করেছিলেন। এরপর থেকে সড়কটি দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করায় ধোপাছড়ির মানুষ ৩০ মিনিটে চন্দনাইশ সদরে যাওয়া-আসা করতে পারে। এদিকে গত বর্ষা মৌসুমে সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ব্রিক সলিন দ্বারা সংস্কার কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু সরকারের এই উন্নয়ন কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্থ করতে বনবিভাগের সাথে একটি কুচক্রি মহল যুক্ত হয়ে সড়ক সংস্কার কাজে বাধা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িসহ অন্যান্য এলাকায় সড়ক যোগাযোগ আছে।
তাই জনস্বার্থে খাঁনহাট-ধোপাছড়ি-বান্দরবান সড়কটি সংস্কারে বাধা প্রদান না করাসহ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য বনবিভাগের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।