ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারগুলো ১১ দিন পরও মেরামত হয়নি

সীতাকুণ্ডে ট্রেন দুর্ঘটনা ।। ভাঙা স্লিপার রেখে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ : রেলকর্মী

লিটন কুমার চৌধুরী, সীতাকুণ্ড | রবিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:২০ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ গেট সংলগ্ন রেললাইন এলাকায় গত ৩ জানুয়ারি সকালে ঢাকামুখী চট্টলা এক্সপ্রেসের পেছনের বগি লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও লাইনচ্যুত বগিটি প্রায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়ার কারণে রেললাইনের অনেকগুলো স্লিপার ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর লাইনচ্যুত হওয়া বগিটি সরিয়ে নিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

তবে দুর্ঘটনার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো মেরামত করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত কংক্রিটের স্লিপারগুলো। অরক্ষিত এসব স্লিপারের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের কারণে ভাঙা অংশগুলো ক্রমশ খসে পড়ছে। এতে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রেলকর্মীদের দাবি, ভাঙা স্লিপার রেখে দিয়ে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রগতি গেট রেললাইন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অধিকাংশ কংক্রিটের স্লিপার। স্লিপার ভেঙে পড়ায় ভেতরের লোহার রডগুলো বেরিয়ে এসেছে। আবার ক্ষতিগ্রস্ত কিছু কিছু কংক্রিটের ভাঙা স্লিপারের নাটবল্টু লাগানোর অংশের পাশে ভেঙে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম ও খুরশিদ আলম জানান, সেদিনের দুর্ঘটনায় বিকট শব্দ শুনে তারা রেললাইনে ছুটে আসেন। দুর্ঘটনায় ট্রেনের পেছনের বগি লাইনচ্যুত হলেও চালক বুঝতে না পারায় আধা কিলোমিটারের অধিক পথ লাইনচ্যুত বগিটিকে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যান। ফলে বগিটির আঘাতে রেললাইনের সুরক্ষায় লাগানো অধিকাংশ স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এখনো ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারগুলো ঠিক করা হয়নি।

লাইন মেরামতির কাজে নজরদারিতে ছিলেন এমন এক সহকারী বলেন, এখন লাইনের যা অবস্থা হয়ে রয়েছে, তাতে কিছুতেই ঘণ্টায় দশ কিলোমিটারের বেশি গতিতে এই লাইন দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে না। কারণ লাইনের নিচে কংক্রিটের স্লিপার ভাঙা থাকায় এর বহন ক্ষমতা কমে গেছে। জোর গতিতে ট্রেন চললে স্লিপারে ভার বেশি হয়। তেমন হলে এই স্লিপারগুলো দুই টুকরা হয়ে যাবে। তাতে ফের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের প্রগতি গেট এলাকার রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে কি ম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলাউদ্দিন বলেন, সেদিনের দুর্ঘটনায় তার অংশের প্রায় দুই হাজার কংক্রিটের স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে স্লিপারগুলোর মেরামত কাজ শুরু হবে। মেরামত কাজ না হওয়া পর্যন্ত সীতাকুণ্ড অংশে ট্রেনের গতি আগের চেয়ে কম রাখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচন নিয়ে ৬ আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতি প্রত্যাখ্যান
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬