ক্লাব বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট থেকেই চালু হচ্ছে ফিফার নতুন অফসাইড প্রযুক্তি, যা খেলার গতি বাড়ানো ও খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বখ্যাত রেফারি এবং ফিফার রেফারিং বিভাগের প্রধান পিয়েরলুইজি কলিনা জানিয়েছেন, এবার অফসাইড সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে অনেক কম, এবং সিদ্ধান্ত হবে আরও নিখুঁত। এই টুর্নামেন্টের ৬৩টি ম্যাচে অংশ নেবেন ১১৭ জন রেফারি, যাদের সহায়তা করবে উন্নত প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, গোল বা বিপজ্জনক আক্রমণ তৈরি হতে পারে এমন পরিস্থিতিতে লাইন্সম্যানরা আর দেরি করে পতাকা তুলবেন না। ১৬টি ট্র্যাকিং ক্যামেরার একটি নেটওয়ার্ক ও এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে অফসাইড অবস্থানে থাকা খেলোয়াড় যখন বল স্পর্শ করবেন, তখনই রেফারির কানে সরাসরি একটি শব্দতরঙ্গ পাঠানো হবে “অফসাইড, অফসাইড”। অফসাইডের পার্থক্য যদি ১০ সেন্টিমিটারের বেশি হয়, তখনই এই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল যাবে। এর ফলে খেলার গতি কমবে না এবং সন্দেহজনক সিদ্ধান্তে সময় নষ্টও হবে না। চোট এড়াতে আগেভাগেই থামবে খেলা।
কলিনা বলছেন, “অনেক সময় খেলোয়াড়রা ৪০ মিটার দৌড়ায় এবং এরপর খেলা অফসাইড বলে বাতিল হয় এতে অপ্রয়োজনীয় চোটের ঝুঁকি থাকে।” তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, নটিংহ্যাম ফরেস্টের তাইও আওনিয়ি একটি খেলায় চোট পান, যেটি আসলে অফসাইড ছিল কিন্তু খেলা থামেনি বলে সমস্যা হয়। কলিনা আরও বলেন, “যদি কোনো খেলোয়াড় ২ মিটার এগিয়ে থাকে, তাহলে তা নিয়ে দোটানা চলে না। লাইন্সম্যানদের আরও সক্রিয় ও সাহসী হতে হবে। সব সময় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। ” নতুন আরেকটি আকর্ষণীয় সংযোজন হলো রেফারিদের গায়ে থাকবে বডি–ক্যামেরা, যার ফুটেজ সমপ্রচারকারী সংস্থা ‘ডিএজেডএন’ সরাসরি সমপ্রচারে ব্যবহার করতে পারবে। দর্শকেরা তাই এবার মাঠের ভেতরের সিদ্ধান্তগুলো আরও বাস্তব ও সরাসরি দেখতে পারবেন। ফিফার প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান ইওহানেস হোলৎসমুলার জানিয়েছেন,“আমরা এমন অ্যালগরিদম তৈরি করেছি, যা প্রতি ম্যাচে লাখ লাখ ডেটা পয়েন্ট বিশ্লেষণ করতে পারে। এই নতুন উদ্ভাবন শুধু দল আর রেফারিদের জন্য নয়, দর্শকদের অভিজ্ঞতাও উন্নত করবে। ” এই প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে এর আগেও যুব পর্যায়ের টুর্নামেন্টে সফলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো বড় মঞ্চে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপে।