বিআরটি প্রকল্পের উত্তরা অংশে গার্ডারের চাপায় হতাহতের ঘটনায় ক্রেন চালক ও তার সহকারীসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীরাও রয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে এক বার্তায় র্যাব জানিয়েছে, ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাবের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান জানান, ক্রেন চালক ও তার সহকারী রুবেল ও আলাউদ্দিনসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার রাজধানীর উত্তরায় প্রাইভেটকারের ওপর নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কংক্রিটের বক্স গার্ডার আছড়ে পড়লে পাঁচজন নিহত ও দুইজন আহত হন। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
সোমবার রাতে এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ক্রেনের অপারেটর, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রকল্পের গার্ডার আছড়ে পড়ে হতাহতের ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়। নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝরনা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু উত্তরা পশ্চিম থানায় এ মামলা করেন।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ মোহসীন জানিয়েছিলেন, মামলায় অবহেলার কারণে প্রাণহানির অভিযোগ করা হয়েছে। ক্রেন চালকের পাশাপাশি প্রকল্পের অন্যতম ঠিকাদার কোম্পানি চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সোমবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরায় জসীম উদ্দীন বাস স্ট্যান্ড এলাকার প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনের সড়কে বিআরটি প্রকল্পের কংক্রিটের গার্ডার ক্রেইন দিয়ে তোলা হচ্ছিল ট্রেইলারে। এর মধ্যে ভারসাম্য হারিয়ে ক্রেন একদিকে কাত হয়ে যায়। তখন ক্রেনে থাকা গার্ডারটি ওই ট্রেইলারের পাশ দিয়ে টঙ্গীমুখী সড়কে চলমান একটি প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে। ভারী ওই গার্ডারের চাপে মুহূর্তের মধ্যে চ্যাপ্টা হয়ে যায় গাড়িটি। গাড়ির জানালার ধারে থাকা নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনিকে (২১) টেনে বের করে স্থানীয়রা দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে পারলেও ওই পরিবারের আরও পাঁচজন গাড়ির ভেতর আটকে থাকেন তিন ঘণ্টা। পরে সন্ধ্যায় গার্ডার সরিয়ে হৃদয়ের বাবা রুবেল মিয়া (৬০), রিয়ার মা ফাহিমা (৪০), খালা ঝর্না (২৮) এবং ঝর্নার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়ার (২) লাশ উদ্ধার করা হয়।











