নগরীর মার্কেটগুলোতে ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে ঈদবাজার। সাধারণত ১৫ রমজানের পর মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সেই দৃশ্য দেখা যায়নি। তবে গত দুদিন ধরে মার্কেটমুখী হচ্ছেন ক্রেতারা। ফলে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার ভয়কে জয় করে ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন। এটা ব্যবসায়ীদের জন্য ইতিবাচক দিক। তবে আমরা কোনো ক্রেতাকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে প্রত্যেক দোকানদের আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নো মাস্ক, নো এন্ট্রি। প্রত্যেক মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য নিয়মিত মাইকিং করে যাচ্ছে।
এদিকে রমজানের বাকি দিনগুলোতে মার্কেট আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট চালু রাখার অনুমতি দিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা করোনার আগে যেভাবে ব্যবসা করতেন সেই হিসেবে স্বাভাবিক নিয়মে দোকান খোলা এবং বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান।
সরেজমিনে গতকাল নগরীর টেরীবাজার, নিউ মার্কেট, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, স্যানমার ওশান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমীন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং মতি টাওয়ারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশ কিছু দোকানে ক্রেতাদের ভিড়।
তবে বরাবরের মতো অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধির দিকে নজর দেননি। অনেকে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরেননি। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়। এমন সতর্ক বাণী আগে থেকেই দিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতারা পছন্দের পোশাক দেখছেন এবং বিক্রেতার সাথে দরদামে মিললে পোশাক কিনে বাড়ির পথ ধরছেন।
গতকাল সানমার ওশান সিটিতে আসা ক্রেতা ফাবলিহা হাসান আজাদীকে বলেন, ঈদের সময় আর বেশি নেই, তাই কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। নিজের জন্য একটি গাউন এবং ছোট বোনের জন্য ফ্রক কিনেছি। এবার আগের বছরগুলোর তুলনায় ভালো কালেকশন এসেছে।
ইউনেস্কো সিটি সেন্টারে আসা গৃহিণী তাহমিনা সুরাইয়া সুর্মি আজাদীকে বলেন, বাচ্চার জন্য জামা নিতে এসেছি। অনেকটা ভয়ে ভয়ে শপিং শেষ করলাম। কারণ ভারতে করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। নিজের জন্য না হোক, বাচ্চার জন্য কিছু একটা কেনা দরকার। সেই তাগিদ থেকে মার্কেটে আসা।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান আজাদীকে বলেন, গত দুদিন ধরে মার্কেটে ভিড় বাড়ছে। তবে সময় আরেকটু বাড়ানো হলে ভালো হতো। আমাদের দেশে সাধারণত অনেক মানুষ ইফতার সেরে মার্কেটে আসেন। সময় বাড়ানো হলে ক্রেতারা ধীরে সুস্থে কেনাকাটা করার সময়টুকু পেতেন। এতে আমরাও উপকৃত হতাম। তিনি বলেন, মার্কেটে ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। আমরাও তাদের বারবার সতর্ক করছি।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল আমিন আজাদীকে বলেন, মার্কেটে ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। এটি আমাদের জন্য ভালো খবর। আমরা সরকার নির্দেশিত শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করছি।
তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল আজাদীকে বলেন, ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে মার্কেটে ক্রেতা আসার হার বাড়ছে। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, করোনা আসার আগে যেভাবে দোকান খোলা-বন্ধ করতাম, সেই নিয়মে যেন আমাদের ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করছি। ক্রেতাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুব্ধ করছি। মার্কেট বন্ধ করার সময়সীমা বাড়ানো হলে ক্রেতা-ব্যবসায়ী উভয়ের জন্য ভালো হবে।












