বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ককটেল বিস্ফোরণসহ শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা ও মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের ৬ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অন্তত আরও ৪০ অজ্ঞাতনামা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার ওসি মনিরুজ্জামান। আগেরদিন সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মচারী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ–সভাপতি শরীফ উদ্দিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১১–১২ সেশনের শিক্ষার্থী ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাইদ, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫–১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৭–১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী এইচটি ইমাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭–১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী জজ মিয়া ওরফে মাজহারুল ইসলাম, আইন বিভাগের ২০১৫–১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী ইয়াসিন আরাফাতসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন। এছাড়া কনকর্ড গ্রুপের নেতা, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩–১৪ সেশনের শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ারসহ বেশ কয়েকজনের নাম পরবর্তীতে মামলায় যুক্ত হবে বলেও জানিয়েছেন মামলার বাদী সাব্বির হোসেন রিয়াদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আমিসহ (বাদী) সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলনের পক্ষে নিয়মিত মিছিল–মিটিং ও সমাবেশ করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা ১০ মিনিটের সময় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় মিছিলে জড়ো হয়ে ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছিলাম। ওই সময় বর্ণিত বিবাদীগণসহ অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রাত সাড়ে ১১টার দিকে পেছন থেকে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ করে। এ ঘটনায় আহত হয় অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সাব্বির হোসেন রিয়াদ (বাদী) বলেন, স্বৈরাচারের সহযোগী এই ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি–ধমকি ও ভয়ভীতি দেখাতো। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্তের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে। মামলায় উল্লেখিত আসামিদের বাইরেও অনেকে এ ঘটনায় জড়িত ছিল। সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এই ব্যাপারে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।