ক্যাচ মিসের মহড়ায় ফসকে গেল ম্যাচ

সিরিজ নিশ্চিত কিউইদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২৪ মার্চ, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

ক্রিকেটের ভাষায় ক্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস। বাংলাদেশ দল একাধিক ক্যাচ মিস করে ম্যাচটাই যেন ফেলে দিল। বলা যায় হাত ফসকে বেরিয়ে গেল ম্যাচ এবং সিরিজ দুটোই। কারণ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি জিততে পারলে সিরিজে টিকে থাকতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি আর হলো না। হাত ফসকে বেরিয়ে গেল ম্যাচটি। ব্যাটসম্যানদের ভালো ব্যাটিংয়ের পরও ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের কারণে টাইগারদের হারতে হয়েছে ৫ উইকেটে। আর এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজও নিশ্চিত করেছে কিউইরা। আগের ম্যাচে বাজে ব্যাটিংয়ের হতাশা পেছনে ফেলে এবার রান এনে দিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বোলাররাও চেষ্টা করলেন। কিন্তু ফিল্ডিংয়ে ফসকে গেল ম্যাচ। দুটি ক্যাচ এবং একটি রান আউটের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়তো ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত। তামিম ইকবালের দায়িত্বশীল ৭৮ ও মোহাম্মদ মিঠুনের ক্যারিয়ার সেরা ঝড়ো ৭৩ বাংলাদেশকে এনে দেয় ২৭১ রানের পুঁজি। নিউজিল্যান্ড লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১০ বল বাকি রেখে। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে ২৬০ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করে জয় এটিই প্রথম।
প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খায়। দ্বিতীয় ওভারেই লিটন দাস বিদায় নেন শূন্য রানে। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৮১ রান যোগ করেন তামিম। ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া সৌম্য মিচেল স্যান্টনারকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে ফিরে যান ৪৬ বলে ৩২ রান করে। এরপর তামিম ও মুশফিকুর রহিমের জুটিও জমে উঠছিল। ৮১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর তামিম খেলছিলেন দারুণ। রানের গতিও বাড়াচ্ছিলেন। তখনই নিশামের অসাধারণ প্রচেষ্টায় তিনি রান আউট। ১০৮ বলে ১১টি চারের সাহায্যে ৭৮ রান করে তামিম ফিরেন হতাশ হয়ে। মুশফিকের সঙ্গে জুটি থামে ৪৮ রানে। চতুর্থ উইকেটে মুশফিক ও মিঠুন আবারো গড়েন হাফ সেঞ্চুরি জুটি। কিন্তু মুশফিকও পারলেন না নিজের স্কোরটাকে বড় করতে। সেই স্যান্টনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন মুশফিক ৫৯ বলে ৩৪ রান করে। এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মিঠুন। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে গড়েন ৪৫ বলে ৬৩ রানের জুটি। যেখানে মিঠুনের অবদান ২৪ বলে ৩৪। মাহমুদউল্লাহ ১৬ রান করে ফিরলেও দলকে ২৭১ রানে পৌঁছে দিয়ে ফিরেন মিঠুন। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত থাকেন মিঠুন।
২৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা নিউজিল্যান্ডের মারকুটে ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিলকে ফেরান মোস্তাফিজ। ভয়ংকর হয়ে উঠার আগে ২০ রান করে ফিরেন গাপটিল। এরপর হেনরি নিকোলস ও উইল ইয়াংকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন মেহেদী হাসান। এরপর শুরু হয় বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ের দৈন্য দশা। টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ের জুটি বেধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। যোগ করেন ১১৩ রান। তামিমের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরেন কনওয়ে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যান থামেন ৭২ রানে। তারপরও স্বাগতিকদের চেপে ধরার সুযোগ ছিল টাইগারদের। কিন্তু ক্যাচ ছেড়ে দেওয়ায় ভেস্তে যায় সব। সহজ দুটি ক্যাচ হাতছাড়ার পর ল্যাথাম ও নিশাম ভুল করেননি সুযোগ কাজে লাগাতে। শেষ দিকে মোস্তাফিজের বলে নিশাম আউট হয়েছেন বটে। তবে ততক্ষণে ম্যাচ তখন কার্যত শেষ। ল্যাথাম ও ড্যারিল মিচেল মিলে শেষ করেন কাজ। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন টম লেথাম। ১০৮ বলে ১০টি চারের সাহায্যে ১১০ রান করে অপরাজিত থাকেন কিউই অধিনায়ক। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ এবং মেহেদী হাসান নেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছে সেঞ্চুরিয়ান টম লেথাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১
পরবর্তী নিবন্ধগ্যাস বিদ্যুৎ পানির সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখার পদক্ষেপ