হাটহাজারীর বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারি ভাতাভোগীদের কাছ থেকে প্রতারক চক্র কৌশলে ভাতার টাকা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক চক্র কখনো সমাজসেবা অফিস কখনো সরকারি অফিসের পরিচয় দিয়ে ভাতাভোগীদের কাছে করছে। ভাতার টাকা বাড়ানোসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে পিন কোড নিয়ে নিচ্ছে। এরপর ভাতার টাকা তারাই তুলে নিচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার হাটহাজারী
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সভায় বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত প্রধান অতিথি বিরোধী দলীয় উপনেতা সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানগণ বিষয়টি উত্থাপন করে এ বিষয়ে প্রতিকার প্রত্যাশা করেন।
জানা যায়, দেশের হতদরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মাতৃকালীন ভাতা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি প্রথা চালু রয়েছে। এক সময় ভাতাভোগীরা সরকারি তালিকাভুক্ত ব্যাংকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এই ভাতা উত্তোলন করতেন। বয়স্ক ও অসুস্থদের জন্য ব্যাংকে গিয়ে ভাতার অর্থ উত্তোলন করা কষ্টকর হওয়ায় সরকার মোবাইলের বিকাশ ও নগদ একাউন্টের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করে। ইদানিং একটি প্রতারক চক্র সহজ–সরল ভাতাভোগীদের মোবাইলে ফোন করে ভাতার টাকা বৃদ্ধিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে পিন কোড সংগ্রহ করে ফেলছে। এরপর তাদের ভাতার টাকা আত্মসাৎ করা শুরু করেছে। উপজেলা / জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে প্রতারক চক্র প্রতিনিয়ত ফোন করছে সুবিধাভোগীদের কাছে।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে এ ব্যাপারে ভাতা ভোগীদের সচেতন করা হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়। সভায় উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যানদের তথ্যানুসারে এ পর্যন্ত উপজেলার আওতাধীন ১৪ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার শতাধিক ভাতাভোগী এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। চিকনদন্ডী ইউনিয়নে মোহাম্মদ সরোবর নামে এক ব্যক্তি ও মির্জাপুর ইউনিয়নের ভাতা ভোগী অলী রানী বড়ুয়া জানান, সমাজ সেবা কার্যালয়ের ফোন পেয়ে তারা নিজেদের পিন কোড সরল বিশ্বাসে যিনি ফোন করেছেন তাকে দিয়েছেন। এইভাবে যে টাকা নিয়ে যাবে তারা বিশ্বাস করতে পারেননি।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এস এম জিন্নাত সুলতানা কেউ ফোন করলে তাকে কোনো অবস্থায় পিন কোড না দিতে নিষেধ করেছেন। এজন্য সকলকে সচেতন থাকার জন্য ভাতাভোগী ও তাদের স্বজনদের সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরে সভায় সাংসদ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সমাজ সেবা দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে লিখিত আবেদন দিতে বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে অবহিত করবেন বলে সভায় উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।