প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি এবং দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের পদত্যাগ দাবিতে নগরীর কোর্টহিলের প্রবেশমুখে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় আন্দোলকারীদের সাথে যোগ দেন একদল আইনজীবী। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে আন্দোলনকারীরা কোর্টহিলের প্রবেশমুখে হাজির হয়ে এ বিক্ষোভ করেন এবং নানা স্লোগান দেন। কিছুক্ষণ পর অবশ্য আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে চলে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সেখানে তারা বলেন, প্রধানবিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান ছাড়া হবে না। তারও কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ফের কোর্টহিলের প্রবেশ মুখে গিয়ে অবস্থান নেন এবং তাদের দাবির কথা বলেন। এরমধ্যে দুপুর আড়াইটায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা কোর্টহিলের প্রবেশমুখ ছেড়ে যান।
এদিকে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের পর সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের আরো পাঁচজন বিচারপতি পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। তারা হলেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম পদত্যাগ করেননি।
কোর্টহিলের প্রবেশমুখে সরেজমিন দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আন্দোলনকারীরা লালদীঘি ও কোতোয়ালী মোড় হয়ে দলে দলে কোর্টহিলের প্রবেশমুখে জড়ো হতে থাকেন। যত সময় গড়াচ্ছিল ততই আন্দোলনকারীর সংখ্যা বাড়ছিল। একটা সময় পর দেখা গেল, কোর্টহিলের প্রবেশমুখ আন্দোলনকারীদের পদভারে ভরে উঠে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এ সময় সেনাবাহিনী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ চলাকালে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভে অংশ নেয়া আইনজীবীরা দাবি করেন, দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া নিম্ন আদালতের পিপি, এপিপিদেরও পদত্যাগ করতে হবে।
সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে গতকাল সকাল ১০টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হবে ও ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ফুল কোর্ট মিটিং আর হয়নি। সেটি স্থগিত করা হয়।