কোরীয় কোম্পানির বাস নিয়ে ‘অম্লমধুর’ সমস্যা

বিআরটিসি ডিপোতে নেই প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং শেড

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

কোরিয়ার দাইয়ু কোম্পানির বাস আন্তর্জাতিকভাবে বেশ স্বীকৃত। তবে শীতপ্রধান দেশে এসব বাসের জনপ্রিয়তা বেশি। কারণ শীতে এসব বাসের রক্ষণাবেক্ষণ কমে যায় অনেকাংশে, চলেও ভালো। যে কারণে শীতপ্রধান দেশে দাইয়ু কোম্পানি বাস লাভজনক হলেও বাংলাদেশে এসব বাস নিয়ে অম্নমধুর সমস্যায় পড়ছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। বিআরটিসির চট্টগ্রাম বাস ডিপোতে থাকা ২১ বাস নিয়ে এমন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্রে জানা গেছে, বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাসডিপোতে দাইয়ু কোম্পানির ২১টি বাস রয়েছে। ২০১১ সালে এসব ব্রান্ডনিউ বাস চট্টগ্রাম ডিপোর বহরে যুক্ত হলেও ইতোমধ্যে ৫টি স্থায়ীভাবে অচল হয়ে পড়েছে। ২টি মেরামত চলছে ডিপোতে। সচল ১৪টি বাস চট্টগ্রাম মহানগরীসহ আন্তঃজেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, আমিরাবাদ, পটিয়াসহ বেশ কয়েকটি রুটে নিয়মিত চলাচল করছে। এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের প্রচেষ্টায় নগরীতে আরো ২২টি বাস নামিয়েছে বিআরটিসি। এরমধ্যে ৪টি রয়েছে দাইয়ু বাস। এসব বাস নগরীর কাটগড়-ইপিজেড-টাইগারপাস-জিইসি-বহদ্দারহাট-কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বন্দরটিলা-টাইগারপাস-নিউমার্কেট- লালদীঘি, ভাটিয়ারী- অলংকার-ডিটি রোড-দেওয়ানহাট-টাইগারপাস-নিউমার্কেট-নতুন ব্রিজ এবং ফতেয়াবাদ- অক্সিজেন-মুরাদপুর-জিইসি-ওয়াসা- বারিক বিল্ডিং রুটে চলাচল করছে। বিআরটিসি চট্টগ্রামে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিআরটিসি বাসডিপোতে প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং শেড নেই। যেটি রয়েছে সেটিতে কয়েকটি বাসের মেরামত কাজ চলছে। ওয়ার্কিং শেডের অভাবে অচল বাসগুলো খোলা মাঠে মেরামত করা হচ্ছে। স্থায়ী অচল বাসগুলো রোদ বৃষ্টিতে মরীচিকা ধরে গেছে। স্থায়ী অচল ৫টি দাইয়ু বাসের অবস্থা একেবারে কঙ্কালসার হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেকনিশিয়ান বলেন, ‘চট্টগ্রাম ডিপোতে প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং শেড নেই। যে কারণে ডিপোতে বসে থাকা বাসগুলো রোদবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে পড়ছে। চলাচলযোগ্য নয় এমন বাসগুলো দ্রুত নিলামে বিক্রি করে ফেললে লোকসান কম হবে। ডিপোতে বসে থাকতে থাকতে একসময় বিক্রয় অনুপযোগী হয়ে যাবে। তখন বিআরটিসি এসব বাস বিক্রির জন্য দৌড়াবে। যা হাস্যকর।’
এ টেকনিশিয়ান বলেন, বাসগুলো ২০১১ সালে ডিপোতে এলেও ২০১৩-১৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা সময় দুয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে বাসগুলো সার্ভিস ওয়ারেন্টি ৮-১২ বছরের। সার্ভিস ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ার আগেও কয়েকটি বাস নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারি সম্পদ হওয়ার কারণে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসব নিয়ে মাথা ঘামান না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস ডিপোর ম্যানেজার মাসুদ তালুকদার দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম ডিপোতে ২১টি দাইয়ু বাস রয়েছে। ১৪টি সচল রয়েছে। দুটির মেরামত কাজ চলছে। শীঘ্রই বাস দুটিও যাত্রীসেবায় নিয়োজিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘দাইয়ু বাসগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বাসগুলো শীতপ্রধান দেশে খুব ভালো চলে। গ্রীষ্মকালীন সময়ে গাড়িগুলোর সার্ভিস ভালো থাকে না। যান্ত্রিক ত্রুটি বেশি দেখা দেয়। ওভারহোলিং বেশি করতে হয়। যে কারণে গরমের সময়ে গাড়িগুলো কাজ বেড়ে যায়। এতে গাড়িগুলোর পেছনে আয়ের চেয়ে ব্যয়ও বেড়ে যায়। তবে এখন শীত মৌসুম শুরু হচ্ছে। শীতকালে কাজ কমে যায়, ভালো চলে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফের মিয়ানমারের ক্ষমতায় সুচির দল
পরবর্তী নিবন্ধকারাগারে আমার বাথরুমে ক্যামেরা বসানো হয়েছিল : মরিয়ম নওয়াজ