খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্তে নারী ও শিশুসহ পাঁচ ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। গত বুধবার গভীর রাতে রামগড় পৌরসভার ফেনীরকূলের কাজীরচর এলাকায় ফেনী নদী দিয়ে ১১৪ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ তাদের কোমরে প্লাস্টিকের বোতল বেঁধে দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ৪৩ ব্যাটালিয়নের মহামুনি বিওপির বিজিবি গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে তাদের আটক করে। আটককৃতরা হল– উমেদ আলী (৪২), তার স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩৫), তিন কন্যা সন্তান রুমি (১৫), রুম্পা (১২) ও সুমাইয়া (৮)।
বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া উমেদ আলী বলেন, ভারতের হরিয়ানা থেকে তাদের ধরে এনে হাত–পা বেঁধে ত্রিপুরা সীমান্তের ফেনী নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। তারা হরিয়ানায় ইট ভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বুধবার রাত ১২টার দিকে মারধর করে নদীতে ফেলে দেওয়ার পর সারারাত তারা নদীর পানিতে ভেসে এসে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে নদীর বাংলাদেশ কিনারায় ভিড়ে। পরে তীরবর্তী গ্রামবাসীর সহায়তায় তারা সোনাইপুল এলাকায় পৌঁছে। তিনি আরও জানান, এর আগে বিএসএফ তাদের কাছ থেকে টাকা–পয়সা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি কেড়ে নেয়। নদীতে ফেলার আগে তাদের কোমরে প্লাস্টিকের খালি বোতল বেঁধে দেয়া হয়। ফলে তারা নদীর পানিতে ভাসতে ভাসতে এপারে চলে আসে।
রামগড় উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসমত জাহান তুহিন বলেন, মানবিক কারণে আটককৃতদের রামগড় হাইস্কুলে বিজিবি ও পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। শনাক্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা তাদের খাবার দিচ্ছে।
পঞ্চগড় ও কুমিল্লা সীমান্তে আরও ৩৪ জনকে পুশ ইন : বাসস জানায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পঞ্চগড় ও কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে নারী–পুরুষ ও শিশুসহ ৩৪ জনকে অবৈধভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে। এদের মধ্যে পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ২১ জন এবং কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে পুশ–ইন করা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এদেরকে আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।