চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেলেন কাটালিন কারিকো এবং ড্রু ওয়েইসম্যান। তাদের নিউক্লিওসাইড বেস পরিবর্তন সংক্রান্ত গবেষণা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এমআরএনএ টিকা তৈরি করতে সাহায্য করেছে, সেই কারণেই এই পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে কাটালিন ও ড্রু–কে। গতকাল সোমবার এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
নোবেল অ্যাসেম্বলির তরফে বলা হয়, কাটালিন ও ড্রুয়ের যুগান্তকারী অনুসন্ধানের মাধ্যমে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে এমআরএনএ’র ঠিক কী রকম সম্পর্ক, সেই ধারণাটাই বদলে গিয়েছে। কোভিডের মতো অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর টিকা তৈরির ক্ষেত্রে তাদের দুজনের অবদান অনেকখানি। ২০০৫ সালে এই দুই বিজ্ঞানীর গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময় এই গবেষণা বিজ্ঞানী মহলে বেশ নজর কাড়ে। তবে কোভিড অতিমারির সময় তাদের গবেষণার প্রয়োগগত দিকটি বিশেষভাবে নজরে আসে। ২০২০ সালে তাদের গবেষণার উপর নির্ভর করে তৈরি দুটি এমআরএনএ টিকা কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
মহামারি শুরুর আগে এই প্রযুক্তি ছিল পরীক্ষামূলক। তবে এই প্রযুক্তিতে তৈরি টিকা এখন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে দেওয়া হয়েছে। ক্যানসারসহ অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে একই ধরনের এমআরএনএ প্রযুক্তি নিয়ে এখন গবেষণা চলছে। নোবেল কমিটি বলছে, আধুনিক যুগে মানবস্বাস্থ্যের বড় হুমকির সময়ে এই দুই বিজ্ঞানী নজিরবিহীন হারে টিকা তৈরিতে অবদান রাখেন। টিকা মানবদেহের ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দেয়, যাতে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মতো হুমকি শনাক্ত করতে পারে এবং এদের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। প্রচলিত টিকা প্রযুক্তি প্রকৃত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মৃত বা দুর্বল সংস্করণ ব্যবহার করে বা সংক্রামক এজেন্টের টুকরো ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। বিপরীতে এমআরএন টিকাগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। করোনা মহামারির সময়ে মডার্না ও ফাইজার/ বায়োনটেক টিকাগুলো এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।
কাটালিন কারিকো ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হাঙ্গেরির সেজড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক। ড্রু ওয়েইসম্যান ভ্যাকসিন গবেষণার অধ্যাপক এবং পেন ইনস্টিটিউট ফর আরএনএ ইনোভেশনের ডিরেক্টর। তারা ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে ইউনির্ভার্সটি অব পেনসেলভেনিয়ায় প্রথম একত্রে কাজ করতে শুরু করেন।