কোভিডের মৃদু সংক্রমণও প্রভাব ফেলতে পারে মস্তিষ্কে, বলছে গবেষণা

| বৃহস্পতিবার , ১০ মার্চ, ২০২২ at ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

যারা মৃদুভাবেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের মস্তিষ্কের দ্রুত বয়স বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পরিবর্তনের কারণ হতে পারে এই রোগ, এমনটাই জানা গেছে নতুন একটি গবেষণা থেকে। বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হননি, তাদের তুলনায় যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের মস্তিষ্কের হলুদ অংশ দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে এবং মস্তিষ্কের টিস্যুতে বেশি অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে। গবেষণায় অনেকগুলো পরিবর্তন ধরা পড়েছে মস্তিষ্কের সেই অংশে, যেখানে ঘ্রাণের অনুভূতিটি নিয়ন্ত্রণ করে। খবর বিডিনিউজের।
এ গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ও অঙফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোয়েনয়েলে দোয়াউদ বলেন, এমনকি মৃদু আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও আক্রান্ত না হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মস্তিষ্কের যে স্পষ্ট পার্থক্য আমরা দেখেছি, তা আমাদের অবাক করেছে।
২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, সংক্রমিত হওয়ার আগে ও পরে গড়ে সাড়ে চার মাসের ব্যবধান রেখে ৪০১ জনের মস্তিষ্কের চিত্র সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেন দোয়াউদ ও তার সহকর্মীরা। এই বিশ্লেষণের ফলাফল তারা তুলনা করেন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হননি এমন ৩৮৪ জন ব্যক্তির মস্তিষ্কের চিত্র বিশ্লেষণের ফলাফলের সঙ্গে। গবেষণায় অংশ নেওয়া এই দুই দলের সদস্যদের বয়স, আর্থসামাজিক অবস্থান এবং উচ্চ রক্তচাপ ও স্থূলতার মতো ঝুঁকির বিষয়গুলোতে সঙ্গতি রাখা হয়েছিল।
দোয়াউদ বলেন, সাধারণত মানুষ বছরে গড়ে তার মস্তিষ্কের হলুদ অংশ থেকে শূন্য দশমিক ২ থেকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ হারায়। মূলত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের স্মৃতি সম্পর্কিত অংশে এই ক্ষয় হয়। কিন্তু এই গবেষণার মূল্যায়নে দেখা গেছে, যারা আক্রান্ত হননি, তাদের তুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে গড়ে অতিরিক্ত শূন্য দশমিক ২ থেকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ টিস্যুর ক্ষয় হয়েছে।
তিনি জানান, মস্তিষ্কের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি যে অংশে হয়েছে, তা অলফ্যাক্টরি সিস্টেম বা ঘ্রাণতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে কেন এমনটি হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। হয়ত এক থেকে দুই বছর পর আবার এসব অংশগ্রহণকারীকে পরীক্ষা করা হলে এ বিষয়ে কোনো ইংগিত মিলতে পারে। সেরকম পরিকল্পনা আমাদের আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ব্রেইন হেলথের নিউরোলজিস্ট রিচার্ড আইজ্যাকসন বলেছেন, এ গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা সতর্কতা জারি করার মত পর্যাপ্ত নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজরিমানার টাকা যুবককে ফেরত দিলেন সর্দার
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে পুকুরে ডুবে চাচাতো ২ বোনের মৃত্যু