কোথায় গিয়ে থামবে মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল?

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি | রবিবার , ২৩ মার্চ, ২০২৫ at ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

দেশের সড়ক বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। অবশ্যই সারাদেশের মহাসড়কগুলো চার লাইন, ছয় লাইনের উন্নতি হলেও এই মহাসড়কটি এখনো চার বা ছয় লাইনে উন্নতি হয়নি।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দূরপাল্লার গাড়িসহ দৈনিক হাজার হাজার গাড়ি এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বান্দরবান নীল আচল, নীলগিরি, মেঘলা, লামা, আলীকদম, টেকনাফ, সেন্টমাটিনসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পগুলো থাকাই দেশের বাহির থেকেও হাজার হাজার টুরিস্টসহ বহির্বিশ্বের ভিআইপিরাও চলাচল করে এই মহাসড়কে।

অথচ এই মহাসড়কে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে, টুরিস্ট, স্কুল, কলেজের পিকনিকের গাড়ি, রোগী পরিবহন করা এম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের পরিবহন। ফলে সড়কেই ঝড়ে পড়ছে মানুষের তাজা প্রাণ, নিমিষেই অন্ধকার নেমে আসছে সড়ক দুর্ঘটনায় কবলে পড়া মানুষ গুলোর পরিবারের মাঝে। বলতে গেলে কোন গাড়িই এখন নিরাপদ নয় এই মহা সড়কে।

সাম্প্রতিক বছর গুলোতে যে ভাবে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে এবং মানুষের প্রাণ হারাচ্ছে অনেকেই বলছে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক মানেই অনিশ্চিত যাত্রা। আগের ডিজাইনের করা প্রায় ১৬০ কিলোমিটার এই মহা সড়ক টিতে বাক রইছে ১৫০ টির বেশি,তাছাড়া মহা সড়ক কেন্দ্রেরীক হাট বাজারেও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক টি বর্তমান সময়ের চাহিদার চার,ছয় লাইনের যেমন উন্নতি হয়নি তেমনি অনেক জায়গায় মূল সড়ক থেকে দুই পাশের মাটির ব্যবধান প্রায় দুই তিন হাতের চেয়েও বেশি উঁচু নিচু হওয়ায় অনেক সময় গাড়ির চাকা রাস্তার থেকে একটু নামলেই গাড়ি সোজা সড়কের বাহিরে।এসব বিষয়ে মাঝে মাঝে সড়ক বিভাগের নামমাত্র কাজ করতে দেখা গেলেও পর্যাপ্ত নয় কাজ গুলো। এছাড়াও মহাসড়কে ইজিবাইক সিএনজি, লবণের গাড়ি ও ব্যাটারি চালিত রিকশাও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

গত ফেব্রুয়ারি মাস সহ চলতি মাসের আজ পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার এই মহা সড়কে ছোট বড় ৩০ টির বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ১৮ জন হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।

এবিষয়ে চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কে চলাচলকারী সৌদিয়া, মারসা ও ঈগল পরিবহনের চালকের সাথে কথা বললে তারা বলেন, মহাসড়কে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দূরপাল্লার যানবাহনসহ সব ধরনের গণপরিবহনের যাতায়াতে বিঘ্নতা সৃষ্টি করছে ব্যাটারি চালিত রিকশা, টমটম, সিএনজি, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ গাড়ি।ধীরগতির এসব যানবাহনের চালকরা মহাসড়কে প্রায় বেপরোয়া হয়ে গাড়ি চলাচলের কারণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে যেমন বেশি সময় লাগছে। তেমনি ঘটছে দুর্ঘটনাও।

এ বিষয়ে সাধারণ পথচারী, পরিবহনের যাত্রী ও সুশীল সমাজের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এই সড়কটি দ্রুত চার, ছয় লাইনে উন্নতি করতে হবে। যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে গাড়িগুলো এখানে যাত্রী বলেন পথচারী বলেন এবং স্থানীয়রা বলেন কেউ নিরাপদ নয়, আমাদের স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের জন্য দুঃশ্চিন্তা করতে হয় সবসময়।পটিয়া, দোহাজারী,লোহাগাড়া ও চকরিয়া অংশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে লোহাগাড়ার চুনতির জাঙ্গালীয়া অংশে ও চকরিয়ায়ার নতুন রাস্তার মাথায়।

এ বিষয়ে কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম, চিরিংগা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল আমিন ও পটিয়া হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ জসিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমরা মহাসড়কে সবসময় কাজ করে যাচ্ছি এবং অবৈধ গাড়ি গুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা সহ পরিবহনের চালকদের মাঝে সচেতনতা
সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় মাইকিং সহ লিফলেট বিতরণ করি আসছি যাতে সড়কে দুর্ঘটনা কম হয়।

এবিষয়ে আরকান সড়ক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ জহিরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন মহা সড়কে অবৈধ গাড়ি গুলো দুর্ঘটনার জন্য অনেক অংশে দায়ী,আর চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে সারা দেশ থেকে দূরপাল্লার গাড়ি গুলো আসে এই মহা সড়ক টি অনেক আগেই চার,ছয় লাইনের করা দরকার ছিল।চার,ছয় লাইনে উন্নতি করা হলে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনা অনেক অংশে কমে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচনের ছয় মাস আগে প্রার্থীদের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের আহ্বান
পরবর্তী নিবন্ধহযরত মওলা আলী (আ.) স্মরণে আলোচনা সভা