চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলায় দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।
যারা সাক্ষী দিয়েছেন তারা হলেন- তৎকালীন পিআইএল বাংলাদেশ লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জহির ও জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মো. মাহতাব উদ্দিন। এই দুইজনসহ মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার মো.ফুয়াদ।
মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, কোকেন মামলার গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ২০১৫ সালে মামলা তদন্ত করার সময় পিআইএল বাংলাদেশ লিমিটেড অফিস থেকে কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করেন। সেই সময় সিঙ্গাপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে করে কন্টেইনার আসার ই-মেইলের কপি, বিল অফ লেডিং ও জাহাজের ছবি সাক্ষীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। আগামী ২৪ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এ সময় মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমেদ শাকিল ও সাহাব উদ্দীন।-বাংলানিউজ
২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ১০ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে এই ১০ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ১৯ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত প্রথম দফায় চার জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল।
অভিযুক্ত ১০ জন হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এ মামলার ১০ আসামির মধ্যে বর্তমানে ২ জন আসামি (খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল ও বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম) কারাগারে আছেন। বাকিদের মধ্যে খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদসহ ৪ জন পলাতক ও ৪ জন জামিনে আছেন।
২০১৫ সালের ৬ জুন নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপকমিশনার এস এম তানভির আরাফাতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়।
বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়।